আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার আগে আরেক দফা নির্বাচনি আইন-বিধিতে সংশোধনী আনা হচ্ছে। পোস্টাল ভোটিং যুক্ত হওয়ার পর গণভোট অধ্যাদেশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) এ সংশোধন হচ্ছে। ইতোমধ্যে ভোট প্রস্তুতির শেষ ধাপে রয়েছে নির্বাচন কমিশন। সরকার ঘোষণা অনুযায়াী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠেয় এ নির্বাচনের তফসিল ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঘোষণার কথা রয়েছে। আইন-বিধি সংস্কার শেষ হয়েছে সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরে। ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)’ সংশোধন অধ্যাদেশ জারি হয়েছে গত ৩ নভেম্বর। এর আলোকে ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা’, ২০২৫ জারি হয়েছে ১০ নভেম্বর। সবশেষ ২৫ নভেম্বর গণভোট অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এরই মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসির সংলাপে বেশ কিছু সুপারিশ এসেছে। ভোটের প্রচারে পোস্টার নিষিদ্ধ হলেও আচরণবিধিতে ‘করণিক’ ত্রুটি থাকা, পোস্টার ব্যবহার বন্ধ করার পর বিলবোর্ড ব্যবহারও সীমিত করায় ইসির সমালোচনা করে বেশ কয়েকটি দল। ওয়ার্ড প্রতি বিলবোর্ড স্থাপন, মাইকের সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাবও করেছে দলের প্রতিনিধিরা। আরপিও সংশোধন ও আচরণবিধির অস্পষ্টতা দূর করে সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবনা আইন মন্ত্রণালয়ে গেল সপ্তাহে পাঠানো হয়। সরকারের সায় পেতে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন লাগবে অধ্যাদেশ সংশোধনে। তবে আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের পর আচরণবিধির সংশোধন করতে পারবে ইসি। এ বিষয়ে গতকাল নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘গণভোটের কারণে আরপিওতে আবার সংশোধনী আনতে হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (আজ) এ-সংক্রান্ত সংশোধনী উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উঠবে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অ্যাডজাস্ট করতে হচ্ছে। আচরণবিধিতেও ভাষাগত সংশোধন আসছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। আরপিও সংশোধনীতে পোস্টাল ব্যালটে ভোটগ্রহণ ও গণনা-সংক্রান্ত অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানান ইসি কর্মকর্তারা। সবকিছু চূড়ান্ত হলে ৭ ডিসেম্বরের কমিশন সভায় তফসিল নিয়ে আলোচনা করবে নির্বাচন কমিশন। এদিকে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এর অনুচ্ছেদ ২৭-এ সংশোধন প্রস্তাব রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পোস্টাল ব্যালটে কোনো প্রতীকের বিপরীতে ক্রস বা টিক চিহ্ন না দিলে তা গণনার বাইরে থাকবে। কোনো আসনে আদালতের রায়ে প্রার্থী তালিকায় পরিবর্তন এলে ওই আসনের জমা হওয়া পোস্টাল ব্যালটও গণনা করা হবে না। পোস্টাল ব্যালটের সঙ্গে যে ঘোষণাপত্র যাবে, সেখানে ভোটার সই না করলে তা গণনায় নেবে না।
আচরণ বিধিমালার দফা ৪-এর উপ-বিধি (৩), বিধি ৬ এর উপ-বিধি (ক), (খ), (গ), (ঘ), বিধি ৯-এর উপ-বিধি (গ) এবং বিধি ২৬-এর উপ-বিধি (৩) এ করণিক ভুল রয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ইসি কর্মকর্তারা।