বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী বলেছেন, প্রশাসনের কাজের সঙ্গে আমাদের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কর্মকর্তা, ব্যক্তিগত কর্মকর্তারাও জড়িত আছে। মাঠপর্যায়ের বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়সমূহের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের যৌক্তিক দাবি সরকার বিবেচনা করবে। একই সঙ্গে এসব যৌক্তিক দাবি পূরণে সহযোগিতা করা হবে।
গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় শিল্পকলা একাডেমিতে বাংলাদেশ মাঠপ্রশাসন প্রশাসনিক কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির (বামাপ্রককস) সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমিতির সভাপতি এস এম জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা জেলার স্থানীয় সরকার উপপরিচালক মো. বদরুদ্দোজা শুভ ও বিভাগীয় কমিশনারের একান্ত সচিব মো. আল মামুন। সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউনুস অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। ঢাকার কমিশনার বলেন, সরকারি কর্মচারী হিসেবে আপনারা আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করুন। সরকার আপনাদের বিষয়ে, আপনাদের ঊর্ধ্বতনরাও আপনাদের যে কোনো যৌক্তিক দাবি পূরণ করবেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দশম গ্রেডভুক্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ৮৩০টি পদ বিদ্যমান আছে। সচিবালয়সহ বিভিন্ন দপ্তর, অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরে কর্মকর্তাদের দশম গ্রেডভুক্ত দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তাদের প্রথম শ্রেণির নবম গ্রেডে পদোন্নতি থাকলেও মাঠপ্রশাসনের দশম গ্রেডভুক্ত দ্বিতীয় শ্রেণির প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নবম গ্রেডের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির সোপান নেই। ২০১৮ সালের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মধ্য মেয়াদি ১ নম্বর সিদ্ধান্তে মাঠ প্রশাসনে কর্মরত তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের সচিবালয়ের মতো পর্যায়ক্রমে পদোন্নতির নিয়োগ বিধি করার সিদ্ধান্ত হয়। ২০১৯ সালে ডিসি সম্মেলনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দীর্ঘ মেয়াদি ৯ নম্বর সিদ্ধান্তে পরীক্ষা-নিরীক্ষাক্রমে জেলা এবং উপজেলা প্রশাসনের তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের সহকারী কমিশনার (নন-ক্যাডার) পর্যন্ত পদোন্নতির বিধান করার সিদ্ধান্ত হয়। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি ২০১৮ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে মাঠ প্রশাসনের কার্যালয়সমূহের সাংগঠনিক কাঠামোতে নবম গ্রেডের ২২২টি পদ সৃজনের সম্মতির জন্য অর্থ বিভাগে প্রস্তাব পাঠানো হয়।
তবে দুবার অর্থ বিভাগ থেকে অসম্মতি দেওয়ায় পদ সৃজনের বিষয়টি বাস্তবায়িত হয়নি। এতে কর্মরতদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়। সর্বশেষ চলতি বছরও ডিসি সম্মেলনে মধ্য মেয়াদি ৫ নম্বর সিদ্ধান্তে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনে নবম গ্রেডের একাধিক পদ সৃজন ও সৃষ্ট পদসমূহে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের মধ্য হতে পদোন্নতির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতোমধ্যেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ হতে গত ২০ জানুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে চিঠি দিয়েছেন। সমিতির সাধারণ সভায় পদোন্নতির সিদ্ধান্ত যেন দ্রুত বাস্তবায়ন হয় সে লক্ষ্যে মাঠপ্রশাসন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা আশা ব্যক্ত করেন। সাধারণ সভায় ৭৯ জন অবসরপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে বিদায়ি সংবর্ধনা ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।