সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনকে অন্তবর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন হাই কোর্ট। গতকাল তাঁর জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজা ও বিচারপতি রেজাউল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। রুলে তাঁকে কেন স্থায়ী জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছেন আদালত। তিন মাস আগে মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান থেকে তাঁকে আটক করেছিল পুলিশ।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শেখ আলী আহমেদ খোকন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মুহাম্মদ আনিছুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী। পরে আইনজীবী শেখ আলী আহমেদ খোকন সাংবাদিকদের বলেন, গত ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহের আদালত তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এরপর মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন চেয়ে আবেদন করলে সেখানেও জামিন নামঞ্জুর হয়।
পরে গত সপ্তাহে হাই কোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। হাই কোর্ট তাঁর নিয়মিত জামিন প্রশ্নে রুল দিয়ে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষ এই জামিনের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন না করলে তাঁর কারামুক্তিতে বাধা নেই।
‘আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের সংবিধান’ শিরোনামে গত ২৮ আগস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ‘মঞ্চ ৭১’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম। সেই অনুষ্ঠানে অংশ নেন আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম, শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে মিছিল নিয়ে একদল ব্যক্তি ডিআরইউ মিলনায়তনে ঢুকে অনুষ্ঠানের আয়োজক এবং অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের ওপর চড়াও হয়। তারা আলোচনা আনুষ্ঠানের ব্যানার ছিঁড়ে আলোচনায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের অবরুদ্ধ করে রাখে। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে পুলিশের (ডিএমপি) একটি দল এলে অবরুদ্ধকারীরা পুলিশের কাছে লতিফ সিদ্দিকী, সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম ও শেখ হাফিজুর রহমানসহ অন্তত ১৬ জনকে তুলে দেন। পরে এই ১৬ জনের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলা করে পুলিশ। এই মামলায় ৬ নভেম্বর হাই কোর্ট সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এবং সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলমকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষ তাঁদের জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করলে ১০ নভেম্বর আপিল বিভাগ আবেদনটি খারিজ করে হাই কোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রাখেন।