সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের পতনের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। তবে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি এখনো স্থিতিশলিতা ও পুনর্গঠনের চ্যালেঞ্জের মুখে। গতকাল রাজধানী দামেস্কের উমাইয়াদ স্কয়ারে বড় উদ্যাপনের আয়োজন করা হয়েছে। ৮ ডিসেম্বরকে সামনের রেখে আগের দিনই সিরিয়ার তরুণরা এ স্কয়ারটি ও দেশটির অন্যান্য অংশে জড়ো হয়ে উদ্যাপন শুরু করে দেয়। এক বছর আগে আগে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট আসাদ দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় পালিয়ে যান। বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারার নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীরা তখন রাজধানী দামেস্ক দখল করে আসাদের দীর্ঘদিনের শাসনের পতন ঘটিয়েছিল। এর আগে আসাদের বিরুদ্ধে গণ অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধ ১৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশটিকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল। সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা এসএএনএ খবর অনুযায়ী, শারা দামেস্কের উমাইয়া মসজিদে ফজরের নামাজ পড়ে দিবসটি উদ্যাপন শুরু করেন।-রয়টার্স
এ সময় তিনি সামরিক বাহিনীর উর্দি পরা ছিলেন। ইসলামপন্থি হায়াত তাহরির আল-শাম গোষ্ঠীর নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীদের বিজয়ী অভিযানের সময়ও শারা এই উর্দি পরেছিলেন। এদিন শারা একটি শক্তিশালী ও ন্যায়সঙ্গত সিরিয়া গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেন। এসএএনএর ভাষ্য অনুযায়ী তিনি বলেছেন, ‘উত্তর থেকে দক্ষিণে এবং পূর্ব থেকে পশ্চিমে, খোদার ইচ্ছায়, আমরা একটি শক্তিশালী সিরিয়া গড়ে তুল্ল যার কাঠামো এর অতীত ও বর্তমানের সঙ্গে মানানসই হবে।’ সাবেক আলকায়েদা কমান্ডার শারা সিরিয়াকে বড় ধরনের পরিবর্তনের পথে পরিচালিত করেছেন যা দেশটির বৈদেশিক সম্পর্ককে পুরোপুরি পাল্টে দিয়েছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন এবং উপসাগরীয় আরব দেশগুলো ও তুরস্কের সমর্থন অর্জন করেছেন আর আসাদের সমর্থক ইরান ও রাশিয়া থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন। সিরিয়াকে পঙ্গু করে রাখা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা তার সময়ে অনেকটাই তুলে নেওয়া হয়েছে। শারা আসাদের নির্মম পুলিশি রাষ্ট্রকে পরিবর্তন করে ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু ইতোমধ্যে সিরিয়ায় বড় ধরনের সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় শত শত মানুষ নিহত হয়েছেন। এতে বহু মানুষ নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে শারা সরকারকে নিয়ে অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। এসব পরিস্থিতির মধ্যেই তিনি পুরো সিরিয়াকে দামেস্কের কর্তৃপক্ষের অধীনে আনার চেষ্টা করছেন। কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রশাসন নিরাপত্তাজনিত কারণে গতকাল সমাবেশ ও অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করেছে। তারা বলছে, ‘সন্ত্রাসী সেলগুলো’ এ উপলক্ষকে কাজে লাগানোর জন্য তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে। তবে আসাদ পতনের বার্ষিকীতে তারা সিরিয়ার জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছে।