দুই বছরের চলা টানা সংঘাত, মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞের মাঝে অনিশ্চয়তা নিয়ে বেঁচে আছে গাজাবাসী। সেখানে প্রতিনিয়ত যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে হামলা চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। এমন মুহূর্তেও আশার আলো দেখিয়ে যাচ্ছে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাবাসী।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ঐতিহ্যবাহী ফিলিস্তিনি পোশাকে একসঙ্গে ৫৪ দম্পতির বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গাজার চলমান যুদ্ধের কারণে বিয়ের অনুষ্ঠান বিরল হয়ে গেছে। নাজুক যুদ্ধবিরতির পর এই ঐতিহ্য আবার ফিরতে শুরু করেছে। যদিও এখন আগের মতো জাঁকজমকপূর্ণ উদ্যাপন হয় না, তবুও নবদম্পতিদের জন্য এটি জীবনের এক ক্ষণিক স্বস্তি নিয়ে এসেছে।
সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহর খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার নবদম্পতিদের বহনকারী শোভাযাত্রা ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের পাশ দিয়ে চলে। নবদম্পতিদের একটি সারি হাত ধরে এগোচ্ছিল। তাদের মধ্যে ছিলেন ইমান হাসান লাওয়া ও হিকমত লাওয়া। ইমান বলেন, সবকিছু সত্ত্বেও আমরা নতুন জীবন শুরু করব। ইনশাআল্লাহ, এ যুদ্ধের শেষ হবে। হিকমত উল্লেখ করেন, আমরা বিশ্বের অন্য সবার মতো সুখী হতে চাই। এক সময় আমার স্বপ্ন ছিল একটি বাড়ি, একটি চাকরি। আজ আমাদের স্বপ্ন শুধু একটি তাঁবু খুঁজে পাওয়া। জীবন ফিরে আসতে শুরু করেছে, কিন্তু আমরা যেমন আশা করেছিলাম তেমনটি নয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের সহায়তায় পরিচালিত একটি মানবিক সহায়তা কার্যক্রম আল ফারেস আল শাহিম গণবিয়ের অর্থায়ন করেছে। অনুষ্ঠান আয়োজনের পাশাপাশি, সংস্থাটি দম্পতিদের একসঙ্গে জীবন শুরু করার জন্য অল্প পরিমাণ অর্থ এবং অন্যান্য সরবরাহ প্রদান করেছে।
বার্নার্ড কলেজের সমাজতত্ত্বের অধ্যাপক রান্দা সেরহান বলেন, প্রতি নতুন বিয়ের সঙ্গে নতুন সন্তান আসে, যা স্মৃতি ও বংশধারাকে বাঁচিয়ে রাখে। অসম্ভব পরিস্থিতিতেও জীবন চলতে থাকে। ইমান ও হিকমত ফিলিস্তিনি পতাকা নাড়ছিলেন, তাদের চারপাশে পরিবার ও বন্ধুরা নাচ ও সংগীতের মাধ্যমে আনন্দ ছড়িয়েছে। ফিলিস্তিনিদের কাছে, বিবাহ দিনব্যাপী আনন্দ উৎসবের একটি বিষয়। এসব অনুষ্ঠানে দম্পতি এবং তাদের প্রিয়জনদের মাধ্যমে পরিহিত কাপড়ের নকশায় বিশাল পরিবারগুলোর দ্বারা রাস্তায় আনন্দময় নৃত্য এবং শোভাযাত্রা এবং খাবারের প্লেট স্তূপ করা। উল্লেখ্য, অক্টোবর ২০২৩ থেকে গাজার সংঘাতে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। যার মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা এ যুদ্ধ গাজার প্রায় সব অঞ্চলকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। -এএফপি