ভারতের ‘সংবিধান দিবস’ ছিল গতকাল। দেশজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে এ বছর ৭৬তম সংবিধান দিবস উদ্যাপিত হয়েছে। আর সংবিধান দিবসেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিশানা করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আগাম ভবিষ্যদ্বাণী, ‘২০২৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তোমরা কোনোভাবেই ক্ষমতায় আসবে না, তার আগেও তোমার গভর্নমেন্ট পড়ে যেতে পারে।’
গতকাল সকালে কলকাতার ভারতীয় সংবিধানের মুখ্য স্থপতি ড. বি আর আম্বেদকরের মূর্তিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে হাতে সংবিধান নিয়ে মমতা বলেন, ‘গোটা দেশে এক পক্ষ চলছে, কোথাও নিরপেক্ষতা নেই। ওরা ভাবছে আজকে ক্ষমতায় আছি, কিন্তু কাল তোমরা থাকবে না। ২০২৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তোমরা কোনোভাবেই আসবে না, তার আগেও তোমার সরকার পড়ে যেতে পারে।’ তার অভিযোগ, ‘আজকে দেশে গণতন্ত্র বিপন্ন, ধর্মনিরপেক্ষতা বিপন্ন। স্বাধীনতার এত বছর পরেও মানুষের ভোটাধিকার ও নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। নতুন করে আমাদের সবাইকে প্রমাণ দিতে হচ্ছে আমরা দেশের নাগরিক কি না! জাতির মধ্যে বিভেদ করে দেওয়া হচ্ছে।
কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ চলছে। এই ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত, মর্মাহত, শোকাহত। তাই আজকের দিনে শপথ নিয়ে গেলাম যে এই গণতন্ত্রকে যে কোন মূল্যে রক্ষা করতে হবে। ভারতের গণতন্ত্র, বৃহত্তম গণতন্ত্র। যারা এখন বর্তমানে কেন্দ্রে ক্ষমতায় আছে তাদের দয়ায় আসেনি। কারণ তারা স্বাধীনতা আন্দোলন করেনি। যারা স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছিল তারা বেশির ভাগই বাংলার লোক।’ অন্যদিকে দেশের সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপণ করে বুধবার নিজের ফেসবুক পেজে সংবিধানকে মহান দলিল বলে অভিহীত করে মমতা লেখেন, ‘মহান সংবিধান যা সব ভারতবাসীকে এক সূত্রে বেঁধে রেখেছে, তার প্রতি অন্তরের গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মান জ্ঞাপন করছি।’ তার অভিমত, সংবিধান হচ্ছে জাতির মেরুদণ্ড। এটি আমাদের বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি, ভাষা ও বিভিন্ন সম্প্রদায়কে অত্যন্ত সুচারুরূপে একত্রিত করে বিবিধের মাঝে ঐক্য স্থাপনকারী একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার পত্তন করেছে। আজ যখন গণতন্ত্র বিপন্ন, ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি ভয়াবহ সংকটে নিমজ্জিত, যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার মূলেই যখন কুঠারাঘাত হচ্ছে, তখন এই গভীর সংকটের মুহূর্তে সংবিধানের মহামূল্যবান পথ নির্দেশগুলো আমাদের সুরক্ষিত রাখতেই হবে।’