‘চলতে কা নাম গাড়ি’ ও ‘হাফ টিকিট’ ছবিতেই একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে মধুবালা আর কিশোর কুমারের মন ভিজেছিল প্রেমের বৃষ্টিতে। আর ভালোবাসার বৃষ্টিস্নাত হয়েই ১৯৬০ সালে কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ সুন্দরী এবং প্রতিভাবান অভিনেত্রী মধুবালা। একসঙ্গে বাঁচার স্বপ্ন দেখলেও ভাগ্যের ফেরে বেশি দিন টিকেনি দুই তারকার সংসার। কারণ বিয়ের পরই জানা যায়, মধুবালার কঠিন অসুখ রয়েছে। তাঁর হৃৎযন্ত্রে ছিদ্র ছিল। ফলে ভারতের চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, মধুবালা বেশি দিন বাঁচবেন না। তবু হার মানেননি কিশোর। মধুবালাকে সঙ্গে নিয়ে লন্ডন চলে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে ৯ বছর ছিলেন দুই তারকা। অসুস্থতার কারণে বিয়ের পরই শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছিলেন অভিনেত্রী। সেই সময় তাঁর দেখভাল করেন কিশোর। মধুবালার বোন মধুর ভূষণের কথায়, ‘কিশোর কুমার যখন মধু আপার শারীরিক অসুস্থতার কথা জানতে পারলেন, তখন উনি মনে মনে ভেঙে পড়লেও আপাকে বুঝতে দেননি। শেষ দিন পর্যন্ত আপাকে মনের জোর জুগিয়েছেন। বলেছেন, দেখা যাক কী হয়।’ ১৯৬৯ সালে কিশোরকে চিরবিদায় জানান মধুবালা। সেই সময় তাঁর বয়স ছিল ৩৬। মধুর অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁর দিদি কিশোর কুমারকে জেদের বশে বিয়ে করেছিলেন। আসলে মধুবালা ভালোবাসতেন দিলীপ কুমারকে। মুঘল-এ আজমের সেট থেকেই প্রেমের সূত্রপাত হয়। নয় বছর সম্পর্কে ছিলেন তাঁরা। দুই তারকার আংটি বদলও নাকি হয়ে গিয়েছিল। তাঁদের সম্পর্ক এতটাই নিবিড় ছিল যে, গোটা ইন্ডাস্ট্রি তাঁদের স্বামী-স্ত্রী বলেই মানত। শোনা যায়, ‘নয়া দৌড়’ ছবির মামলায় বি আর চোপড়াকে সমর্থন করেছিলেন দিলীপ কুমার। যা একেবারেই পছন্দ হয়নি অভিনেত্রীর। আসলে ‘নয়া দৌড়’ ছবিতে মধুবালার কাজ করার কথা ছিল। কিন্তু ৩০ হাজার টাকা নেওয়ার পরও ৪০ দিনের জন্য মেয়েকে আউটডোর শুটিংয়ে পাঠাতে চাননি মধুবালার বাবা আতাউল্লাহ খান। তিনি চেয়েছিলেন মুম্বাইয়ে শুটিং হোক। অনেক বুঝিয়ে কাজ না হওয়ায় মামলা করেন বি আর চোপড়া।
সিনেমায় একসঙ্গে কাজ করতে করতেই মধুবালার প্রেমে পড়েছিলেন কিশোর কুমার। অভিনেত্রীকে ভালোবেসেছেন আজীবন। শোনা যায়, তাঁকে বিয়ে করার জন্য নিজের ধর্ম পর্যন্ত পাল্টে নিয়েছিলেন কিশোর কুমার। অভিনেত্রীরও মনে ধরেছিল সুপুরুষ গায়ককে। কানাঘুষায় শোনা যায়, মধুবালাকে বিয়ে করার জন্য লুকিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন বিশ্ববরেণ্য সংগীতশিল্পী কিশোর কুমার। ‘চলতি কা নাম গাড়ি’, ‘হাফ টিকিট’-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করতে করতে বলিউডের শ্রেষ্ঠ সুন্দরী মধুবালার প্রেমে পড়েছিলেন কিশোর কুমার। দুজনের মধ্যে ধীরে ধীরে প্রেম জন্মেছিল। একদিন সাহস করে কিশোর বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে ফেলেন কিংবদন্তি অভিনেত্রীকে। সঙ্গে সঙ্গেই নাকি কিশোরকে হ্যাঁ বলেছিলেন মধুবালা। কানাঘুষায় শোনা যায়, মধুবালাকে বিয়ে করার জন্য লুকিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন বিশ্ববরেণ্য সংগীতশিল্পী। তবে এ বিষয়টি যে একেবারেই সঠিক নয়, তা জানিয়ে দিলেন মধুবালার বোন মধুর ভূষণ। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে মধুর জানিয়েছেন, কিশোর কুমার কোনো দিনই ধর্ম পরিবর্তন করেননি। তাঁর কথায়, ‘অনেকেই বলেন মধুবালাকে বিয়ে করার জন্য কিশোর নাকি ধর্ম বদলেছিলেন। বিষয়টি সর্বৈব মিথ্যা। আমৃত্যু হিন্দু ছিলেন উনি। তিনি বলেন, ‘আমাদের বাড়ির কোনো জামাই ধর্ম পরিবর্তন করেননি।’ মধুর ভূষণ নিজেও হিন্দু পাঞ্জাবিকে বিয়ে করেছেন। তাঁদের আরও এক বোন চঞ্চলও পাঞ্জাবি পরিবারেই গাঁটছড়া বেঁধেছেন। তবে আলতাফ এবং কানিজ নামের ছোট দুই বোন পার্সি পরিবারে বিয়ে করেছেন। মধুবালার কোনো বোনের স্বামীই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেননি, সেই কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মধুর।