রুশ কমান্ডাররা ভøাদিমির পুতিনকে পূর্ব ইউক্রেনের পোকরোভস্ক শহরের পুরোটা দখলে নেওয়ার কথা নিশ্চিত করার পর উচ্ছ্বসিত প্রেসিডেন্ট একে ‘গুরুত্বপূর্ণ জয়’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এ সাফল্য যুদ্ধের বৃহত্তর লক্ষ্য পূরণে মস্কোকে সহায়তা করবে। পোকরোভস্ক শহরকে রাশিয়া সোভিয়েত আমলের ক্রাসনোআর্মেইস্ক নামে ডাকে। এক সময় ইউক্রেন সেনাবাহিনীর কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ রসদ সরবরাহ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত শহরটি দখলে রাশিয়া ২০২৪ সালের মাঝামাঝি থেকেই অভিযানে নেমেছিল। তবে ইউক্রেন মস্কোর দাবি অস্বীকার করে বলেছে, তাদের সেনারা এখনো শহরটিতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
শহরটি রক্ষায় আগুয়ান রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল ইউক্রেনের সেনারা। ‘আমি আপনাদের ধন্যবাদ দিতে চাই। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ পথ। আমরা সবাই জানি এটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ,’ এক কমান্ড সেন্টারে বসে সামরিক উর্দিতে সজ্জিত পুতিন সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্তাদের উদ্দেশে এ কথা বলেন বলে সোমবার রাতে ক্রেমলিনের দেওয়া এক ভিডিওর বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ‘বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর সময় প্রাথমিকভাবে আমরা যেসব কাজ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলাম, পদক্ষেপগুলো যে সেদিকেই যাচ্ছে এটা (ক্রাসনোআর্মেইস্কের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া) তা নিশ্চিত করবে,’ বলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। ইউক্রেন মস্কোর দাবি অস্বীকার করে বলেছে, তাদের সেনারা এখনো শহরটিতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। শহরটির পতন হলে তা মস্কোকে আরও উত্তরে ইউক্রেনের দখলে থাকা দোনেৎস্কের দুটি বড় শহর ক্রামাতোরস্ক ও সেøাভিয়ানস্কের দিকে যাওয়ার সুযোগ করে দেবে। রাশিয়া ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ দনবাস অঞ্চল চাইছে, যা মূলত দুটি প্রদেশ দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক নিয়ে গঠিত। লুহানস্কের প্রায় পুরোটা এখন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। পোকরোভস্কের অবস্থান দোনেৎস্কে। রয়টার্স স্বাধীনভাবে রাশিয়া বা ইউক্রেন কারও দাবিই যাচাই করতে পারেনি। যুদ্ধের আগে পোকরোভস্কে ৬০ হাজারের বেশি বাসিন্দা ছিল। এটি ইউক্রেনের কোক কয়লার একমাত্র উৎসের কাছেই অবস্থিত। ইউক্রেন কিছু না বললেও দীর্ঘদিন ধরে উভয় পক্ষের দেওয়া যুদ্ধক্ষেত্রের মানচিত্রে রাশিয়া যে শহরটি দখলে একটু একটু করে অগ্রসর হচ্ছে তা বোঝা যাচ্ছিল। এমন এক সময়ে পুরো পোকরোভস্ক রাশিয়া দখলে নেওয়ার দাবি করল, যখন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রচেষ্টা জোরদার করেছে। গতকাল মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও জামাতা জারেড কুশনারের বৈঠক হওয়ার কথা। এর আগে ২০২৪ সালের শুরুর দিকে আভদিভকা দখলই ছিল রুশ সেনাদের সবচেয়ে বড় অর্জন। ইউক্রেনের দিনিপ্রোপেত্রভস্কেও রুশ সেনারা ঢুকে পড়েছে বলে আগে জানিয়েছিল ক্রেমলিন। সামনে ওই অঞ্চলের দখলও ক্রমশ ইউক্রেনের সেনাদের হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সামরিক কমান্ডাররা পুতিনকে বলেছেন, রুশ সেনারা যুদ্ধক্ষেত্রের প্রায় সর্বত্রই সাফল্য অর্জন করছে। -রয়টার্স