গাজায় যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের জন্য ফিলিস্তিনকেই দায়ী করেছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানি। দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকায় এক ইসরায়েলি সেনা নিহত হওয়ার পর যুদ্ধবিরতি ভেঙে হামলা চালায় ইসরায়েল। তবে ওই সেনা নিহতের বিষয়টি আদৌ সত্য কি না, তা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের এক অনুষ্ঠানে সাক্ষাৎকারে কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসরায়েলি সেনাদের ওপর যে হামলা হয়েছে, সেটি মূলত ফিলিস্তিনি পক্ষের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন। তিনি আরও জানান, হামাস জানিয়েছে, ওই গোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের যোগাযোগ নেই।
এদিকে, ইসরায়েলি সেনা নিহত হওয়ার পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ‘শক্তিশালী পালটা হামলার’ নির্দেশ দেন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১০৪ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ৪৬টি শিশু ও ২০ জন নারী। এরপর বুধবার সন্ধ্যায় গাজার বেইত লাহিয়া এলাকায় চালানো হামলায় অন্তত দুজন নিহত হন।
ইসরায়েল দাবি করেছে, তাদের হামলার লক্ষ্য ছিল হামাসের জ্যেষ্ঠ যোদ্ধারা ও এতে ‘ডজনখানেক’ হামাস সদস্য নিহত হয়েছেন। এরপর বুধবার দুপুরে আবার যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার ঘোষণা দেয় ইসরায়েল। কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধবিরতি টিকিয়ে রাখতে আমরা দুই পক্ষের সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছি। যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা এখানে ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি মনে করি, মঙ্গলবার যা ঘটেছে, তা স্পষ্টতই একটি লঙ্ঘন। আল থানি আরও বলেন, হামাসের পক্ষ থেকে নিহতদের লাশ হস্তান্তর বিলম্বিত করার চেষ্টা হচ্ছিল বলে খবর পাওয়া গেছে। আমরা তাদের পরিষ্কারভাবে জানিয়েছি, এটি চুক্তির অংশ ও তাদের সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে হবে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত আমরা বহু চ্যালেঞ্জ ও বাধার মুখে পড়েছি। এটি কোনো সহজ পথ ছিল না। তবুও আমরা প্রথম যুদ্ধবিরতি, দ্বিতীয় যুদ্ধবিরতি এবং এখনকার এই যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। -ডন
ঘটনাটিকে ‘খুবই হতাশাজনক ও দুঃখজনক’ হিসেবে বর্ণনা করে আল থানি বলেন, আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাৎক্ষণিক উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে পূর্ণ সমন্বয়ের মাধ্যমে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছি ও দেখেছি, যুক্তরাষ্ট্রও এ চুক্তি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এদিকে দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূমি পূর্ব জেরুজালেমের দক্ষিণাঞ্চলে এক হাজার ৩০০ নতুন বসতি নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে ইহুদিবাদী ইসরায়েল। চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে সর্বসম্মতিক্রমে সরকারের গুশ এৎজিয়ন বসতি ব্লকের বিশেষ পরিকল্পনা ও নির্মাণ কমিটি পরিকল্পনাটির অনুমোদন দেয়। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকার ২০২২ সাল থেকে এ পর্যন্ত পশ্চিম তীরে প্রায় ৪৮ হাজার বসতি স্থাপন করার অনুমোদন দিয়েছে। পশ্চিম তীরে অভিযান, জমি দখল ও বসতি স্থাপন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর বার্তা দেওয়ার এক সপ্তাহ পার না হতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল সরকার। এছাড়াও ট্রাম্পের ওই মন্তব্যের একদিন আগে দখলকৃত পশ্চিম তীর ও মা’লে আদুমিম আবাসন ব্লক সংযুক্ত করার দুটি প্রস্তাবিত আইনের প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলি সংসদ নেসেট। -ডন