রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে যুক্তরাষ্ট্র প্রণীত নতুন শান্তি প্রস্তাবের বিষয়ে ওয়াশিংটনকে আনুষ্ঠানিক জবাব দিয়েছে ইউক্রেন। বুধবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন মার্কিন ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুদ্ধ সমাপ্তির উদ্যোগ দ্রুত এগোচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও একাধিকবার বলেছেন সমাধান খুব কাছাকাছি।
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প জানান, ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির নেতাদের সঙ্গে তিনি এ বিষয়ে ‘গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা’ করেছেন। তারা চান, ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ইউরোপে আরেক দফা বৈঠক হোক। ট্রাম্প বলেন, ‘তারা কী বলে তা দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। সময় নষ্ট করতে চাই না।’
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ২৮ দফার একটি যুদ্ধ–বিরতি খসড়া তৈরি করে। রাশিয়া এটার কিছু শর্তে সমর্থন দেয়। পরে কিয়েভ ও মস্কোর সঙ্গে আলোচনার পর খসড়াটি ২০ দফায় নামিয়ে আনা হয়, যাতে উভয় পক্ষের আপত্তিকর অংশগুলো কমানো হয়। একই সঙ্গে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ও ইউক্রেনের যুদ্ধোত্তর অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের বিষয়ে আরও দুটি পৃথক দলিল নিয়ে আলোচনা চলছে।
দুটি ইউরোপীয় কূটনীতিক জানিয়েছেন, সংশোধিত ২০ দফায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব আছে। এর মধ্যে রয়েছে—সংঘর্ষ–সীমান্ত বরাবর ডিমিলিটারাইজড জোন (সামরিকবিহীন অঞ্চল) তৈরি, ইউক্রেনকে ন্যাটোর অনুচ্ছেদ–৫–এর মতো নিরাপত্তা নিশ্চয়তা (যেখানে এক সদস্য আক্রান্ত হলে অন্যরা রক্ষা করবে), ২০২৭ সালের মধ্যে ইউক্রেনের ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদান, ন্যাটোতে যোগদানে বাধা সংক্রান্ত ভাষা বাদ দেওয়া, ৬০–৯০ দিনের মধ্যে নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে ইউক্রেনে নির্বাচন আয়োজন
তবে কিছু প্রস্তাব ইউক্রেন ও ইউরোপের উদ্বেগ বাড়াতে পারে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চলগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির কথা উল্লেখ আছে—যা মার্কিন নীতির বড় পরিবর্তন হবে। এছাড়া ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সদস্যসংখ্যা সর্বোচ্চ ৮ লাখে সীমাবদ্ধ রাখার প্রস্তাব রয়েছে।
এদিকে পশ্চিমা দেশগুলো মনে করছে, আলোচনার পরিবেশ নাজুক। কারণ ভূমি–ছাড় বা সীমান্তস্বীকৃতির মতো বিষয়গুলো নিয়ে সহজে সমঝোতা হবে না। একই সঙ্গে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শান্তি চুক্তির ব্যাপারে আগ্রহী এমন কোনো সংকেত দেননি।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, আমরা দুই পক্ষের মধ্যে ফারাক কমানোর চেষ্টা করছি। তবে শেষ সিদ্ধান্ত তাদের। যদি তারা যুদ্ধ শেষ করতে না চায়, তবে যুদ্ধ চলতেই থাকবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল