গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চলমান থাকা অবস্থায় পশ্চিম তীরেও নতুন করে দখলদারিত্ব বাড়ানোর পথ খুলে দিল ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের এই অঞ্চলে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের জন্য নতুন ৭৬৪টি বাড়ি নির্মাণের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে দেশটির সরকার।
বুধবার ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল সেভেনের বরাতে এই তথ্য জানায় তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু।
চ্যানেল সেভেনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ইসরায়েলের সরকার ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের জন্য পশ্চিম তীরের রাজধানী রামাল্লার হাশমোনাইম এলাকায় ৪৭৮টি, বেইতার ইল্লিত এলাকায় ২৩০টি এবং গিভাত জেএভ এলাকায় ৫৬টি, সব মিলিয়ে ৭৬৪টি নতুন বাড়ি তৈরির অনুমোদন দিয়েছে। তবে ইসরায়েল সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এই ইস্যু নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
আন্তর্জাতিক আইন ও জনমত উপেক্ষা করে গত কয়েক দশক ধরে ধীরে ধীরে পশ্চিম তীরে নিজেদের দখলকৃত এলাকা বাড়াচ্ছে ইসরায়েল। ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বধীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে এই তৎপরতা কয়েক গুণ বেড়েছে।
ইসরায়েলের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, নেতানিয়াহু প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর গত ৩ বছরে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের জন্য পশ্চিম তীরের বিভিন্ন এলাকায় মোট ৫১ হাজার ৩৭০টি নতুন বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
পিস নাও নামে ইসরায়েলের যে সংস্থাটি অবৈধ দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে সরব, তাদের তথ্য অনুযায়ী, প্রস্তাবিত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী পূর্ব জেরুজালেমে বর্তমানে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার ও পশ্চিম তীরে ৪ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি ইহুদি বসতি স্থাপনকারী (সেটলার) বসবাস করছেন। জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত অনুসারে মধ্যপ্রাচ্যের আল-আকসা অঞ্চলে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন নামের দুটি পৃথক রাষ্ট্র হওয়ার কথা।
কিন্তু প্রায় প্রতি বছর ইসরায়েল পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের সংখ্যা বাড়াতে থাকায় প্রস্তাবিত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ভূখণ্ড কমছে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ ইস্যুতে বহুবার ইসরায়েলকে আপত্তি জানানো হয়েছে, কিন্তু ইসরায়েলের সরকার এসবে কর্ণপাত করছে না।
গত বছর জুলাই মাসে জাতিসংঘের আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস এক রায়ে পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেম এলাকায় নতুন বাড়িঘর নির্মাণ ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের অবৈধ বলে ঘোষণা করেছিলেন এবং ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের সরিয়ে নিতে ইসরায়েলের সরকারকে নির্দেশও দিয়েছিলেন। এরপরও এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি তারা।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি
বিডি-প্রতিদিন/সুজন