বিশ্বের প্রথম বড় ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
বুধবার রাত ১২টার পর থেকে দেশজুড়ে কার্যকর হওয়া এই আইন অনুযায়ী ১৬ বছরের কম বয়সিদের ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব, টিকটক, স্ন্যাপচ্যাট, রেডিট, এক্সসহ জনপ্রিয় অ্যাপ ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
নিষেধাজ্ঞা না মানলে এসব প্ল্যাটফর্মকে ৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হবে। সিডনি থেকে এএফপি জানিয়েছে, প্রযুক্তি জায়ান্টদের বিরুদ্ধে এত বড় পদক্ষেপ নেওয়া প্রথম দেশগুলোর একটি হলো অস্ট্রেলিয়া, যেটি এখন অন্য অনেক দেশের নজরে রয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে। আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনগুলোর একটি এটি। আমরা নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নেব।’
সরকার বলছে, কিশোরদের ফোন স্ক্রিনে বুলিং, যৌনতা ও সহিংসতার ভিডিও ঠেলে দেওয়া “শিকারী অ্যালগরিদম” থেকে শিশুদের রক্ষায় এই নজিরবিহীন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আইন কার্যকরের পর বৃহস্পতিবার সকালে লাখো কিশোর-তরুণ ঘুম থেকে উঠে দেখেছে, তারা আর আগের মতো অ্যাপগুলোতে ঢুকতে পারছে না। মাত্র ১০ বছর বয়সি বিআঙ্কা নাভারো এএফপিকে বলেছে, ‘অনেক খারাপ লাগবে। আমাকে এখন ছয় বছর অপেক্ষা করতে হবে।’
এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে জনপ্রিয় স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম টুইচ ও কিক–ও। একই তালিকায় আছে মেটার নতুন অ্যাপ থ্রেডস ও এক্স।
অভিভাবকদের অনেকেই এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। অনলাইন বুলিংয়ের কারণে গত বছর ছেলে অলিকে হারানো মিয়া ব্যানিস্টার বলেন, ওজন কমানোর ভিডিওর অন্তহীন স্রোত সন্তানের খাদ্যাভ্যাসকে মারাত্মকভাবে বদলে দিয়েছিল।
গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত অনলাইন সময় কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, স্মার্টফোনের ব্যবহারকে অন্য জীবনযাত্রার প্রভাব থেকে আলাদা করে দেখা কঠিন।
পাঁচ সন্তানের বাবা দানি এলাচি মন্তব্য করেছেন, ‘এ সীমাবদ্ধতা দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ছিল। সময় এসেছে লাগাম টানার।’
বিডি-প্রতিদিন/সুজন