ভারতের পর্যটন নগরী গোয়ার একটি নাইটক্লাবে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২৫ জনের প্রাণহানির ঘটনার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ক্লাবের মালিক দুই ভাই। পুলিশ নিশ্চিত করেছে, অভিযুক্ত সৌরভ লুথরা এবং গৌরব লুথরা ঘটনার পরপরই থাইল্যান্ডের ফুকেটের উদ্দেশে বিমানে দেশত্যাগ করেছেন। তদন্ত এড়াতেই তারা সটকে পড়েছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ। পলাতক এই দুই ভাইকে খুঁজে বের করতে এবং গ্রেফতারের জন্য ইন্টারপোলের সহায়তা চেয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গোয়ার আরপোরা এলাকার জনাকীর্ণ স্থানে অবস্থিত ‘বার্চ বাই রোমিও লেন’ নামক ওই নাইটক্লাবটিতে আতশবাজি ফোটানোর সময় আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুনের স্ফুলিঙ্গ কাঠের তৈরি সিলিংয়ে স্পর্শ করলে মুহূর্তের মধ্যে তা ভয়াবহ রূপ নেয়। ক্লাবটি একটি ঝিলের মাঝখানে দ্বীপের মতো জায়গায় অবস্থিত এবং সেখানে যাতায়াতের জন্য কেবল সরু পথ থাকায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। ঘটনার সময় ক্লাবটি কানায় কানায় পূর্ণ ছিল এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আগুন লাগার পর হুড়োহুড়িতে চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
নিহতদের অধিকাংশই ছিলেন ওই ক্লাবের কর্মচারী, যাদের মধ্যে চারজন নেপালি নাগরিকও রয়েছেন। এছাড়া দিল্লি থেকে আগত একই পরিবারের চারজন সদস্য এবং আগামী বছর বিয়ের কথা ছিল এমন দুই ভাইও এই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত সবার মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং বর্তমানে পাঁচজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে পুলিশ জানায়, গ্রেফতারের জন্য দিল্লিতে লুথরা ভাইদের বাড়িতে অভিযান চালানো হলে জানা যায় তারা আগেই দেশত্যাগ করেছেন। অভিযুক্ত সৌরভ লুথরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান দাবি করে গভীর শোক প্রকাশ করলেও নিজের বর্তমান অবস্থানের কথা গোপন রেখেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানালেও তার ভাই গৌরব লুথরা এখন পর্যন্ত জনসমক্ষে কোনো মন্তব্য করেননি। এই ঘটনার জেরে ক্লাবের ম্যানেজারসহ অন্তত চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল