কোনো মুসলিম নারী আদালত কক্ষে হিজাব পরলে বিচারক বা প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে রায় দিয়েছেন জার্মানির একটি আদালত। তবে সমালোচকরা এ সিদ্ধান্তকে ধর্মীয় স্বাধীনতার লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন।
স্থানীয় সময় সোমবার (১ নভেম্বর) দেশটির হেসে রাজ্যের প্রশাসনিক আদালত এ রায় দিয়েছেন। আদালতে হিজাব রাখার সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় সংশ্লিষ্ট নারী আইনজীবীর আবেদন বাতিল করার সরকারি সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। তবে আদালত স্বীকার করেছে, ওই আইনজীবীর ধর্মীয় স্বাধীনতা সাংবিধানিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ অধিকার।
ডার্মস্ট্যাড প্রশাসনিক আদালতের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আইনজীবীর ধর্মীয় স্বাধীনতা সাংবিধানিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও, এটি রাষ্ট্রের নিরপেক্ষতা ও বিচারকার্যে অংশগ্রহণকারীদের ধর্মীয় স্বাধীনতার মতো অন্যান্য সাংবিধানিক নীতিগুলোর দ্বারা ছাপিয়ে যায়।
আদালতের মতে, বিচারকার্যের সময় ধর্মীয় প্রতীকী পোশাক পরা রাষ্ট্রের নিরপেক্ষতার নীতি লঙ্ঘন করে এবং বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতায় জনগণের আস্থাq আঘাত করে পারে।
আবেদন সাক্ষাৎকারে ওই নারীকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, বিচারপ্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগের সময় তিনি কি হিজাব খুলবেন? তিনি স্পষ্টভাবে ‘না’ বলেন। এরপর হেসে কর্তৃপক্ষ আবেদনটি প্রত্যাখ্যান করে জানায়, বিচারক বা প্রসিকিউটরের মতো রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে ধর্মীয় প্রতীক প্রকাশ্যে ধারণ করা নিরপেক্ষতার নীতি ভঙ্গ করতে পারে এবং বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
গত অক্টোবর মাসে লোয়ার স্যাক্সনিতে এমন একটি রায় দেওয়া হয়েছিল। ওই সময় একজন নারীকে লে-জাজ (সাধারণ নাগরিক বিচারক) হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় হিজাব পরতে নিষেধ করা হয়। ব্রাউনশোয়েইগ হায়ার রিজিওনাল কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, রাজ্য আইন বিচারকদের রাজনৈতিক, ধর্মীয় বা আদর্শগত দৃষ্টিভঙ্গির প্রতীকগুলো প্রকাশ করতে নিষেধ করে, যা লে-জাজদেরও জন্য করা হবে।
সামাজিক মাধ্যমে ধর্মীয় স্বাধীনতার সমর্থকরা এ রায়গুলোর সমালোচনা করে বলছেন, ‘জার্মানিতে ‘রাষ্ট্রীয় নিরপেক্ষতা’ ধারণাটি এখন বৈষম্যের হাতিয়ার হয়ে উঠছে।’ সমালোচকদের দাবি, এসব রায় মুসলিম নারীদের ওপর অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রভাব ফেলছে এবং তাদের আইনি পেশা ও সরকারি খাতে অংশগ্রহণের পথে বড় বাধা তৈরি করছে।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি।
বিডি প্রতিদিন/কামাল