দুই দশকের বেশি সময়ের পর ক্যারিবীয় দ্বীপ রাষ্ট্র সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডিন্সে প্রথমবারের মতো গডউইন ফ্রাইডে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নির্বচিত হয়েছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বাম-ঘেঁষা নেতা রাফ গনসালভেসের সরকারকে পরাজিত করে ক্ষমতায় এসেছেন তিনি।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ঘনিষ্ঠ মিত্র গনসালভেস ২০০১ সাল থেকে ক্ষমতায় ছিলেন। তার দল ইউনিটি লেবার পার্টি এবার ১৫টি আসনের মধ্যে মাত্র একটিতে জয়ী হয়েছে। অন্যদিকে গডউইনের নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি বাকি ১৪টি আসনে জয়লাভ করেছে। যদিও আনুষ্ঠানিক ফলাফল এখনও প্রকাশিত হয়নি।
গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টে দলটি সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রেনাডাইনসে তার নির্বাচনী এলাকার জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়েছে বলেন, আমরা তোমাদের ভালোবাসি। আমরা তোমার জন্য কাজ এবং সমর্থন চালিয়ে যাব।
গনজালভেস ২০০১ সাল থেকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী, যা তাকে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী গণতান্ত্রিক নেতাদের একজন করে তুলেছে। ইতিহাসবিদ হিসেবে পরিচিত ৬৬ বছর বয়সী গডউইন, নতুন মায়েদের আর্থিক সহায়তা, চাকরিচ্যুতদের জন্য কর্মসংস্থান এবং ছোট ব্যবসার জন্য সমর্থনসহ জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনগণের মন জয় করেন।
এই নির্বাচন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হলো যখন ক্যারিবীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি বাড়ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মাদক চোরাচালান দমনের অজুহাতে এই অঞ্চলে বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরী মোতায়েন করেছে। তবে ভেনেজুয়েলা অভিযোগ করেছে, ওয়াশিংটন মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে চায়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী গনসালভেস আঞ্চলিক সংস্থাগুলিতে নিয়মিতভাবে মাদুরোকে সমর্থন করতেন। ২০২৩ সালে মাদুরো এবং গায়ানার প্রেসিডেন্ট ইরফান আলির মধ্যে বিরোধপূর্ণ এসকুইবো অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা চলাকালীন একটি শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজনও করেছিলেন তিনি।
১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে এবং ২০০০-এর দশকের গোড়ার দিকে ল্যাটিন আমেরিকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়া প্রথম ‘পিঙ্ক টাইড’ প্রবণতার শেষ অবশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের মধ্যে তিনিও ছিলেন। সেই সময়কালে ব্রাজিল থেকে ভেনেজুয়েলা পর্যন্ত বেশ কয়েকটি দেশে বামপন্থী নেতাদের নির্বাচন দেখা গিয়েছিল।
সেন্ট ভিনসেন্টে ৩২টি দ্বীপ এবং দ্বীপপুঞ্জের সমন্বয়ে গঠিত। যার মধ্যে মাত্র নয়টি জনবসতিপূর্ণ এলাকা। এক লাখ জনসংখ্যার দেশটি কৃষি এবং পর্যটনের মতো শিল্পের উপর নির্ভর করে অর্থনীতি গড়ে উঠেছে। নির্বচনের আগে ভিনসেন্টা মজুরি বৃদ্ধি, নিরাপত্তা উন্নত করা এবং চীনের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার উপর জোর দিয়েছিলেন।
সূত্র: আলজাজিরা
বিডি প্রতিদিন/কামাল