পাকিস্তানের কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের স্বাস্থ্যের অবনতি আশঙ্কায় তার দল পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) সরকার ও কারা কর্তৃপক্ষের কাছে অবিলম্বে তার সাক্ষাত চেয়েছে। দলটির অভিযোগ, গত তিন সপ্তাহ ধরে পরিবার ও আইনজীবীরা তাকে দেখতে পাচ্ছেন না, কোনো কারণও জানানো হচ্ছে না।
ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে। দুর্নীতির অভিযোগে ১৪ বছরের সাজা ঘোষণা করা হয়। তিনি বরাবরই এসব মামলাকে সাজানো ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে আসছেন। সেনাবাহিনী তাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে এসব ব্যবস্থা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তবে সেনাবাহিনী এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পিটিআইয়ের মুখপাত্র জুলফিকার বুখারি জানান, ৪ নভেম্বরের পর থেকে কেউ ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। তিনি বলেন, আমরা তার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন। অবৈধভাবে তাকে একা রাখা হচ্ছে। তিনি সরকারের কাছে দাবি করেন, ইমরান খানের পরিবারের সঙ্গে দ্রুত সাক্ষাতের ব্যবস্থা করতে হবে।
ইতোমধ্যে রাওয়ালপিন্ডির কারাগারের বাইরে পরিবার ও দলীয় নেতারা বিক্ষোভ করেছেন। বৃহস্পতিবার দলের একটি প্রতিনিধিদল কারাগারে গেলেও আবারও সাক্ষাতের অনুমতি অস্বীকার করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী সপ্তাহে অন্তত একদিন সাক্ষাতের সুযোগ থাকার কথা, যদিও কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে তা স্থগিত করতে পারে।
স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, ৭৩ বছর বয়সী এই সাবেক ক্রিকেট তারকাকে উচ্চ নিরাপত্তা কারাগারে সরানো হতে পারে। এতে সাক্ষাত আরও কঠিন হয়ে যাবে। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমেও আলোচনা চলছে, এবং #WHERE IS IMRAN KHAN (ইমরান খান কোথায়) সারা দিন ট্রেন্ড করেছে।
অন্যদিকে কারা বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইমরান খান সুস্থ আছেন এবং তাকে অন্য কোনো কারাগারে স্থানান্তরের কোনো পরিকল্পনা জানা নেই। তিনি গণমাধ্যমে কথা বলার অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশ করেননি।
২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ইমরান খান। তবে ২০২২ সালে সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে মতবিরোধ বাড়লে তিনি পার্লামেন্টের ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন।
২০২৩ সালে গ্রেপ্তারের পর দেশজুড়ে তার সমর্থকদের বিক্ষোভ হলে কঠোর দমনের মুখে পড়ে পিটিআই।
২০২৪ সালের নির্বাচনে পিটিআই সর্বোচ্চ ভোট পায়, তবে দলটির অভিযোগ—জালিয়াতির মাধ্যমে তাদের অনেক আসন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এসব অভিযোগ নাকচ করেছেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল