বহুবিবাহ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করতে ভারতের আসাম রাজ্য সরকার নতুন বিল এনেছে। বৃহস্পতিবার রাজ্য বিধানসভায় ‘দ্য আসাম প্রোহিবিশন অফ পলিগ্যামি বিল, ২০২৫’ নামক বিলটি সর্বসম্মত ভাবে পাস হয়।
পরবর্তীতে এই বিলটি যাবে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পরেই বিলটি আইনে পরিণত হবে এবং সেই সাথে এর কার্যকারিতা শুরু হয়ে যাবে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘আমরা বিলটি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সম্মতির জন্য সংরক্ষণ করব এবং যতক্ষণ না তিনি এটি অনুমোদন এবং স্বাক্ষর করেন, ততক্ষণ এটি বাস্তবায়িত হবে না। যেহেতু রাষ্ট্রপতি নিজেই একজন নারী, তাই আমি মনে করি না যে বিলটি তার অনুমোদন থেকে বঞ্চিত হবে।’
গত মঙ্গলবার, শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিন বিলটি উত্থাপন করা হয়, বিল উত্থাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।
প্রস্তাবিত বিধান অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তির স্ত্রী বা স্বামী এখনও জীবিত বা যার পূর্বের বিবাহ বৈধভাবে বিচ্ছিন্ন হয়নি, তাকে আরেকটি বিবাহ করার অনুমতি দেওয়া হবে না। এছাড়া, পূর্বের বিবাহ গোপন করে পরবর্তী বিবাহ করা অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে। বিলের খসড়া অনুযায়ী, যদি কেউ তার জীবিত স্বামী বা স্ত্রী থাকাকালীন অবস্থায় বহুবিবাহে যুক্ত হন, তবে তাকে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড এবং জরিমানা করা হবে। যদি পূর্বের বিবাহ পরবর্তী হবু স্বামী বা স্ত্রীর থেকে আড়াল করা হয়, তাহলে শাস্তি বেড়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা হবে। একাধিকবার যারা এই অপরাধটি করবে তাদের ক্ষেত্রে শাস্তি দ্বিগুণ হবে।
স্থানীয় প্রশাসন, পিতামাতা বা অভিভাবক যারা জেনে-বুঝে এই ধরনের বিবাহকে সহায়তা বা গোপন করবেন, তাদের সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং এক লাখ রুপি পর্যন্ত আর্থিক জরিমানা হতে পারে। পণ্ডিত বা কাজি যারা বিলের নিয়ম ভঙ্গ করে বিবাহ সম্পন্ন করবেন, তাদেরও দুই বছরের কারাদণ্ড এবং দেড় লাখ রুপি জরিমানা হতে পারে।
নতুন এই বিলের আওতায়, গ্রাম, স্থানীয় কাজি এবং অভিভাবকরা যে কোনও বহুবিবাহ বা তার পরিকল্পনা পুলিশের কাছে জানাতে বাধ্য থাকবেন। এমনটা না করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অসমের কোনও বাসিন্দা যদি রাজ্যের বাইরে বহুবিবাহে যুক্ত হন, তাদের ক্ষেত্রেও এই আইন প্রযোজ্য হবে। পাশাপাশি এই বিলের একটি মূল বৈশিষ্ট্য হল বহুবিবাহের শিকার নারীদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য একটি বিশেষ আর্থিক তহবিল তৈরি গঠন করা।
বিডি-প্রতিদিন/আশফাক