মিয়ানমারে আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন কোনওভাবেই অবাধ বা গ্রহণযোগ্য হবে না বলে মন্তব্য করেছেন থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। একইসাথে তিনি আটক গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সু চির মুক্তিরও আহ্বান জানিয়েছেন।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনী নোবেলজয়ী সু চির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করে। এরপর দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়।
সামরিক জান্তা এই নির্বাচনকে সমঝোতার একটি সুযোগ হিসেবে প্রচার করলেও এতে অং সান সু চি বা তার বিলুপ্ত ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) দল অংশ নিচ্ছে না।
যেসব এলাকায় সেনাবাহিনী বা তাদের মিত্রদের নিয়ন্ত্রণ নেই, সেখানে ভোট হবে না। বিশ্লেষকরা এটিকে চলমান সামরিক শাসন আড়াল করার কৌশল হিসেবে দেখছেন।
থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিহাসাক ফুয়াংকেতকেও মঙ্গলবার রাতে বলেন, “আমরা চাই অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। তবে আমরা জানি যে, তা হবে না। আমার মনে হয়, আমরা এই নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেওয়ার মতো অবস্থায় থাকব না।”
তবে তিনি এটিকে সংস্কারের পথে একটি ধাপ হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, ২০১০ সালে জেনারেল থেইন সেইন একটি ‘ত্রুটিপূর্ণ’ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং পরে তিনি অং সান সু চিকে মুক্তি দেন। যার ফলে এনএলডি পরবর্তী নির্বাচনে জয়লাভ করে।
ব্যাংককে সাংবাদিকদের সিহাসাক বলেন, হয়তো একটি ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনও দেশকে স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্রে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে ভালো সুযোগ হতে পারে।
প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডে মিয়ানমারের লাখো মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। কেউ সংঘাত থেকে পালিয়ে এসেছে, কেউ আবার ভেঙে পড়া অর্থনীতির কারণে কাজের খোঁজে দেশ ছেড়েছে।
পেশাদার কূটনীতিক ও ফ্রান্সে নিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রদূত সিহাসাক মানবিক দিক বিবেচনা করে ৮০ বছর বয়সী অং সান সু চিকে মুক্তি দিতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, তাকে মুক্তি দেওয়ার সময় এসেছে। অনেক দিন ধরে তিনি আটক আছেন। তার বয়স বিবেচনায় আমরা তার শারীরিক অবস্থার খবরও জানি না। তাই, আমি আশা করি তারা যত দ্রুত সম্ভব তাকে মুক্তি দেবে।
মিয়ানমারে নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ শুরু হবে ২৮ ডিসেম্বর। দ্বিতীয় ধাপ হবে ১১ জানুয়ারি। তবে পরবর্তী ধাপগুলো এবং ফল ঘোষণার তারিখ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানানো হয়নি। সূত্র: ব্যাংকক পোস্ট, এএফপি
বিডি প্রতিদিন/একেএ