বিশ্ব রাজনৈতিক অঙ্গনে টানটান উত্তেজনার মধ্যেই সোমবার কথা হলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের। ফোনালাপে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেল তাইওয়ান ইস্যু—যা ঘিরে চীন ও জাপানের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্র কূটনৈতিক বিরোধ চলছে। আলোচনার পর ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্র–চীন সম্পর্ক ‘অত্যন্ত শক্তিশালী’।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ফোনালাপে ইউক্রেন পরিস্থিতিসহ আরও কিছু বৈশ্বিক বিষয় উঠে এলেও তাইওয়ান ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। চীন মনে করে, তাইওয়ান তাদের অভিন্ন ভূখণ্ড। শি বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় (post-war international order: যুদ্ধ-পরবর্তী বৈশ্বিক ব্যবস্থা) তাইওয়ানের চীনে ফেরত যাওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত ছিল। তার ভাষায়, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে যুদ্ধ-পরবর্তী বিজয় রক্ষা করা আরও গুরুত্বপূর্ণ।’
সম্প্রতি জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি বলেছেন, তাইওয়ানে হামলা হলে টোকিও সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারে। এ মন্তব্যেই চীন–জাপান উত্তেজনা চরমে ওঠে।
যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে তাইওয়ানকে স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দিলেও দ্বীপটির সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক মিত্র এবং অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ। চীনের দাবি অনুযায়ী, ফোনালাপে ট্রাম্প শিকে জানান, ওয়াশিংটন তাইওয়ান ইস্যুর গুরুত্ব বোঝে।
ট্রাম্প আরও জানান, তিনি আগামী এপ্রিল চীন সফরে যাবেন। ২০২৬ সালে শির ওয়াশিংটন সফরও নির্ধারিত হয়েছে।
গত অক্টোবরে মুখোমুখি বৈঠকের পর দুই নেতার এই আলোচনা হলো। আগের আলোচনায় তারা একটি প্রাথমিক বাণিজ্য সমঝোতায় পৌঁছান। চীন এক বছরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ শিথিল করতে রাজি হয়। যুক্তরাষ্ট্রও কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক কমাতে রাজি হয়। পাশাপাশি চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে লক্ষ লক্ষ টন সয়াবিন কেনার অঙ্গীকার করে।
শি ফোনালাপে বলেন, দুই দেশের সাম্প্রতিক অগ্রগতি সম্পর্ককে ‘স্থিতিশীল পথে’ এগোতে সাহায্য করছে। ট্রাম্পও একই সুরে জানান, ‘এখন বড় দৃশ্যপটের দিকে তাকানোর সময়।’ আলোচনায় ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও কথা হয়। শি জানান, ‘টেকসই ও ন্যায্য শান্তি’ প্রতিষ্ঠার যে কোনো প্রচেষ্টাকে চীন সমর্থন করে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল