ভারতের রাজধানী দিল্লির বায়ুদূষণ এ বছর নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত একটি দিনও বিশুদ্ধ বাতাসের দেখা মেলেনি শহরটিতে। এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই সারা বছরই ৫০-এর উপরে থেকেছে।
দীপাবলির পর থেকেই পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। নভেম্বরের ১১ তারিখে দিল্লির গড় একিউআই বেড়ে দাঁড়ায় ৪২৮ এ। যাকে গুরুতর দূষণ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। আজ, ২৪ নভেম্বর, উত্তর দিল্লির আশোক বিহার ও দক্ষিণের ময়দান গড়ি অঞ্চলে একিউআই ৭০০ ছুঁয়ে যায়।একে অতি বিপজ্জনক পর্যায় বলেই বিবেচনা করেন সংশ্লিষ্ট খাতের বিশেষজ্ঞরা।
দূষণে দিশেহারা দিল্লির সাধারণ মানুষ শরণাপন্ন হচ্ছেন এয়ার পিউরিফায়ারের। প্রাণ রক্ষা করতে অন্তত ঘরের ভেতরের বাতাসটুকু পরিষ্কার রাখাই এখন তাদের একমাত্র চেষ্টা। আট বছর ধরে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহারকারী মহিত শ্রীবাস্তব জানান, আমার অ্যাজমা আছে। এখন আমার দুই সন্তানও একই সমস্যায় ভুগছে। এ অবস্থায় ঘরোয়া সুরক্ষায় পিউরিফায়ার ছাড়া উপায় নেই।
শুধু মধ্যবিত্ত নয় নিম্ন আয়ের মানুষও এখন পিউরিফায়ারের দিকে ঝুঁকছেন। ক্লিন প্লাস-এর মালিক সুনীল কুমার জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর তাঁর সংস্থার পিউরিফায়ার বিক্রি দ্বিগুণ বেড়েছে।
এদিকে পরিবেশবিদদের মতে, পিউরিফায়ার খুব সীমিতভাবে কাজ করে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা বিমলেন্দু ঝা বলেন, পুরোপুরি বন্ধ ঘরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চালালে কিছুটা উপকার হতে পারে, কিন্তু এটি কোনোভাবেই শহরের সামগ্রিক দূষণ কমাতে পারে না। মানুষ বুদবুদে বাস করে না।
তবুও অনেকে বাড়িতে এর সুবিধা অনুভব করছেন। নয়ডার বাসিন্দা ইশা আগরওয়াল বলেন, কয়েক ঘণ্টা চালানোর পর ঘরের বাতাস অনেকটা পরিষ্কার লাগে। পরিবারের সদস্যদের অসুস্থতাও কিছুটা কমেছে।
এদিকে দূষণের প্রতিবাদে দিল্লিবাসীর আন্দোলনও জোরদার হয়েছে। গত এক মাসে চারবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন বাসিন্দারা। সরকার গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যানের তৃতীয় ধাপ চালু করে নির্মাণকাজ ও ডিজেল গাড়ির চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও নাগরিকদের অভিযোগ, এ পদক্ষেপ মোটেও যথেষ্ট নয়।
সূত্র: আরব নিউজ
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল