চীনের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে ফিলিপাইনের এক সাবেক মেয়রসহ চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। এছাড়া তাদের দুই মিলিয়ন পেসো জরিমানা করা হয়েছে।
ফিলিপাইনের ওই সাবেক মেয়রের নাম অ্যালিস গুও। তিনি দেশটির টারলাক প্রদেশের বামবান শহরের মেয়র ছিলেন। তিনি ওই শহরে একটি জালিয়াতি কেন্দ্র পরিচালনার মাধ্যমে মানবপাচার করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ওই জালিয়াতি কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৮০০ ফিলিপিনো এবং বিদেশিকে উদ্ধার করা হয়েছিল। এরপর গুওর বিরুদ্ধে অনলাইন ক্যাসিনোর আড়ালে জালিয়াতি কেন্দ্র এবং মানবপাচার সিন্ডিকেট পরিচালনার অভিযোগ আনা হয়।
৩৫ বছর বয়সী ওই নারীকে গত বছর কয়েক সপ্তাহ ধরে পলাতক থাকার পর গ্রেফতার করা হয়। তবে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি আপিল করতে পারবেন কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। অ্যালিস গুওর বিরুদ্ধে এখনও পাঁচটি মামলা চলমান রয়েছে। এর মধ্যে একটিতে তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে।
২০২২ সালে গুও রাজধানী ম্যানিলার উত্তরে অবস্থিত বামবানের মেয়র নির্বাচিত হন। বামবানের বাসিন্দারা আগে সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন যে, তিনি একজন যত্নশীল ও সহানুভূতিশীল নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু ২০২৪ সালে কর্তৃপক্ষ সেখানে একটি বড় জালিয়াতি কেন্দ্র উদঘাটন করার পর নীরব শহরটি আলোচনায় উঠে আসে।
কর্তৃপক্ষ গুওর জীবন কাহিনীতেও অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছে। তিনি দাবি করেছিলেন, তিনি ফিলিপাইনে জন্মেছেন, কিন্তু পরে জানা যায় তিনি কিশোর বয়সে পরিবারসহ চীন থেকে এসেছেন। পরে তদন্তকারী সংসদ সদস্যরা দেখতে পান যে, তার আঙুলের ছাপ হুয়া পিং নামে একজন চীনা নাগরিকের সঙ্গে মিলে যায়।
এরপরই তাকে দ্রুতই মেয়রের পদ থেকে অপসারণ করা হয়। মামলার আরও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের পর ২০২৪ সালের জুলাই মাসে তিনি নিখোঁজ হন। পরে তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য চারটি দেশে আন্তর্জাতিক অভিযান শুরু হয়।
ওই অভিযানে ইন্দোনেশিয়া থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে তাকে গ্রেফতার করে ফিলিপাইনে ফেরত পাঠানো হয়। এরপর তার ফিলিপাইনের পাসপোর্টও বাতিল করা হয়। সূত্র: আল-জাজিরা, রয়টার্স, ডয়েচে ভেলে
বিডি প্রতিদিন/একেএ