পেশায় দিনমজুর এক ব্যক্তিকে ‘বিত্তশালী’ ভেবে অপহরণের পর দাবি করা হয় সাড়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ। মুক্তিপণের টাকা দিতে পারছিলেন না নাজিম উদ্দিন নামের ওই ব্যক্তি।
পরে তার পরিবারের মাধ্যমে বিষয়টি জানার পর অভিযানে নামে র্যাব। র্যাবের অভিযানে ধরা পড়ে দুই অপহরণকারী। গতকাল বৃহস্পতিবার জেলার হাটহাজারীর নজুমিয়া হাট এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার দুইজন হলেন মো. আজম ও আবু সামা। উদ্ধার করা হয় অপহরণের শিকার দিনমজুরকে।
শুক্রবার বিকালে বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানায় র্যাব।
র্যাব–৭ চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) এ আর এম মোজাফফর হোসেন বলেন, অপহৃতকে অন্যত্র স্থানান্তর করার সময় একটি গাড়ির ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জড়িত বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
র্যাব জানায়, নোয়াখালীর সেনবাগের বাসিন্দা নাজিম উদ্দিন জীবিকার জন্য চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার মোহাম্মদনগর এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। গত রবিবার প্রতিদিনের মতো কাজের সন্ধানে বাসা থেকে বেরিয়ে জেলার ফটিকছড়ির মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফে যান তিনি। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১২টার দিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় শহরের ভাড়া বাসায় ফেরার উদ্দেশে রওনা হন। গাড়িতে তিনি ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। হাটহাজারীর সরকার হাট বাজারে পৌঁছালে আজম ও তার সহযোগীরা গাড়ি থেকে নামিয়ে তাকে অপহরণ করেন। এরপর সরকার হাট-বাজারের পাশে একটি কক্ষে নিয়ে নির্যাতন করেন। এগুলোর ছবি তারা নাজিমের স্ত্রীর মুঠোফোনে ইমোতে দেন। সাড়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এ ঘটনায় নাজিমের স্ত্রী নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। বিষয়টি র্যাব জানতে পেরে অপহরণকারীদের খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে গতকাল অপহৃতকে সরকার হাট থেকে নজুমিয়া হাট এলাকা দিয়ে অন্যত্র রাখার জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় র্যাব হাতেনাতে ধরে ফেলে। আসামিদের হাটহাজারী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
অপহৃত নাজিম উদ্দিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘অটোরিকশা থেকে আমাকে নামানোর সঙ্গে সঙ্গে আমি চিৎকার দিই। তখন অপহরণকারীরা গাড়িচোর বলে আমাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়। প্রথমে আমার কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আমার পেশা দিনমজুর বলা হলেও তারা বিশ্বাস করেনি। দিনমজুর বলার পর মারধরের পরিমাণও বেড়ে যায়। তারা মনে করেছিল আমি ব্যবসায়ী, টাকাওয়ালা।’
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ