বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভুটানের পণ্য পরিবহনের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম (ট্রায়াল রান) শুরু হয়েছে। প্রথম ট্রানজিট চালানের ৬ টন পণ্য বুধবার চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ডেলিভারি শেষে সড়কপথে ভারত হয়ে ভুটানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে।
থাইল্যান্ডের ল্যাম চাবাং বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে আনা এই পরীক্ষামূলক চালানে রয়েছে চকলেট, শ্যাম্পু, শুকনো পাম ফল ও জুস–জাতীয় পণ্য। পণ্যগুলো থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করছে ভুটানের একটি প্রতিষ্ঠান।
চট্টগ্রাম বন্দরে খালাসের দায়িত্বে থাকা সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান এনএম ট্রেডিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহীদুল আলম খান জানান, কাস্টমস–সংক্রান্ত সব প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার খালাসের কথা থাকলেও শিপিং এজেন্টের পাওনা পরিশোধ না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। আজ চার্জ পরিশোধ করে পণ্য ডেলিভারি নেওয়া হবে।
ট্রানজিট পথ অনুযায়ী, চালানটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সড়কপথে লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর হয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দরে প্রবেশ করবে। এরপর শিলিগুড়ি হয়ে ভুটানের অভ্যন্তরে পৌঁছাবে। এ পথে বন্দর ও সড়ক ব্যবহার বাবদ বিভিন্ন ফি ও মাশুল পরিশোধ করতে হচ্ছে ভুটানকে। প্রথম চালান থেকে কাস্টমস ও সড়ক পরিবহন বিভাগের টোল–মাশুলসহ মোট ৮৫ হাজার ৬৬৬ টাকা আদায় করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপকমিশনার এইচ এম কবির বলেন, ‘পণ্য বাংলাদেশে ভোগ বা ব্যবহার হবে না, তাই কোনো কাস্টমস ডিউটি নেই। তবে ট্রানশিপমেন্ট, সড়ক ব্যবহার, টোল, ডকুমেন্টেশন ও স্ক্যানিং–সংক্রান্ত চার্জ আদায় করা হয়েছে।’ কাস্টমসের চারজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা চালানটি এস্কর্ট করে বুড়িমারী স্থলবন্দর পর্যন্ত নিয়ে যাবেন।
বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে ট্রানজিট চুক্তি ও প্রটোকল সই হয় ২০২৩ সালে। দুই বছর পর সেই চুক্তির আওতায় পরীক্ষামূলক পরিবহন শুরু হলো। যদিও চালানটি গত সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়, সরকারি সংস্থাগুলোর ফি ও মাশুল নির্ধারণ, কাস্টমস প্রক্রিয়া ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে প্রায় দুই মাস সময় লেগে যায়। ১৭ নভেম্বর এনবিআরের আদেশ জারি এবং ২০ নভেম্বর সড়ক টোল–সংক্রান্ত চিঠি পাঠানোর পর শুল্কায়নের কাজ শুরু হয়।
ভুটান স্থলবেষ্টিত দেশ হওয়ায় আমদানি–রপ্তানিতে অন্য দেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করতে হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরীক্ষামূলক পরিবহন সফল হলে নিয়মিত ট্রানজিট চালান শুরু হবে। এতে শুধু দুই দেশের বাণিজ্যই বাড়বে না, বাংলাদেশও ট্রানজিট ফি থেকে আয় বাড়াতে পারবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘পণ্য এলে বন্দর নিয়ম অনুযায়ী চার্জ পাবে। যত বেশি পণ্য আসবে, তত বেশি আয় হবে বন্দরের।’
বিডি-প্রতিদিন/সুজন