দীর্ঘ টানাপড়েনের পর কূটনৈতিক তৎপরতায় অবশেষে ভারতে ফিরলেন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা সোনালি বিবি। ভারতীয় হাইকমিশনের অনুরোধে মানবিক কারণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিজিবি কর্তৃক শুক্রবার বিএসএফের নিকট হস্তান্তর করা হয় তাকে।
এদিন সন্ধ্যায় ভারত-বাংলাদেশের মালদহ সীমান্ত দিয়ে আট বছরের ছেলেকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ফেরেন অন্তঃসত্ত্বা ওই নারী। তবে এখনও তার পরিবারের চার জন বাংলাদেশে রয়ে গেছেন। তাদের দ্রুত ফিরিয়ে আনার দাবি তুলেছে তৃণমূল।
এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মালদহের জেলা পরিষদের সভাধিপতি লিপিকা বর্মণ ঘোষ। সোনালিকে যখন মালদহে আনা হয়, তিনি ছিলেন ঘটনাস্থলে। ওই জনপ্রতিনিধির কথায়, আমাদের দুই নাগরিককে ছাড়ানো হয়েছে। ডেপুটি হাই কমিশনারকে (ভারতের) জিজ্ঞাসা করলাম, আর চার জন কই? তিনি জবাব না-দিয়ে পালিয়ে গেলেন। আমরা চাই দ্রুত তাঁদের ছাড়া হোক।’ তার সংযোজন, এই মানুষগুলির সঙ্গে বেইমানি করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
গত জুন মাসে সোনালি বিবি-সহ ৬ জনকে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ সন্দেহে দিল্লি থেকে ধরেছিল পুলিশ। বাংলাদেশে ‘পুশ ইন’ করার সময়েই সোনালি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাই কোর্ট তাদের চার সপ্তাহের মধ্যে ভারতে ফেরানোর নির্দেশ দেয়। কিন্তু, কেন্দ্র তা না-মানায় হাই কোর্ট আদালত অবমাননার মামলা করার নির্দেশ দেয়। যার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম লড়াই করেছিলেন।
ঘটনাক্রমে বাংলাদেশে তাড়িয়ে দেওয়া পশ্চিমবঙ্গের সোনালি বিবি এবং তার আট বছরের সন্তানকে ভারতে ফিরিয়ে আনতে হবে বলে গত বুধবার কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে দেশে ফিরিয়ে আনার পরে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেউ ভারতের নাগরিক কি না, তা যাচাই করার জন্য কেন্দ্রের পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আদালত। এখন সোনালির স্বামী দানিশ শেখ, সুইটি বিবি ও তার দুই নাবালক সন্তানকেও একসঙ্গে ফেরানো উচিত ছিল বলে দাবি তুলেছে তৃণমূল।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল