বিশ্বে প্রতি ছয়জনের একজন তাদের জীবদ্দশায় বন্ধ্যাত্বের ভুগছেন। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক দেশে অধিক হারে বন্ধ্যাত্বের পরও পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। ফলে রোগীদের পরীক্ষা এবং চিকিৎসার জন্য বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। অনেক সময় আইভিএফ (ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) পদ্ধতিতে সন্তান প্রসবের আয় গড় বার্ষিক আয়ের দ্বিগুন।
ব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেন, বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে উপেক্ষিত জনস্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে একটি হলো বন্ধ্যাত্ব প্রজননজনিত রোগ। লাখ লাখ মানুষ এই রোগের চিকিৎসার বাইরে থেকে যাচ্ছেন। সন্তান ধারণে সফল না হলে ওই নারী-পুরুষকে বন্ধ্যা বলা হয়।
তার মতে, বন্ধ্যাত্ব মানুষের সামাজিক ও মানসিক যন্ত্রণার কারণ হয়। অনেকে তাদের আর্থিক নিরাপত্তার অথবা সন্তান ধারণের মতো একটি বিষয়কে বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে জন্মহারের রেকর্ড সর্বনিম্ন হলেও, অভিবাসনের কারণে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ডব্লিউএইচওর প্রতিবেদনে, বন্ধ্যাত্বের উপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রথম নির্দেশিকাটিতে ৪০টি সুপারিশ রয়েছে। যা বন্ধ্যাত্বের সাধারণ কারণ খুঁজে বের করার জন্য নির্দিষ্ট রোগ বা অবস্থা জানার জন্য একটি যত্ন, নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য প্রমাণ-ভিত্তিক পদ্ধতির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আইভিএফ (ইন–ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) পদ্ধতিতে সন্তান প্রসবের চিকিৎসার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সম্পর্কে বয়সের ব্যবধান, যৌন সংক্রমণ সম্পর্কিত বিষয়ে অসচেতনতা, দ্বন্দ্ব, দুর্দশা এবং আর্থিক কষ্টের কারণ বন্ধ্যাত্ব বাড়ছে বলে প্রতিবেদেন উঠে এসেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে সাশ্রয়ী মূল্যে উন্নতমানের সেবা প্রাপ্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে আরও বিনিয়োগ করতে হবে। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় স্বাস্থ্যকর খাদ্য, শারীরিক কার্যকলাপ এবং তামাক ব্যবহার বন্ধের মতো জীবনধারার ব্যবস্থাগুলি সুপারিশ করা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যৌন, প্রজনন, মাতৃত্ব, শিশু ও কিশোর স্বাস্থ্য এবং বার্ধক্য বিভাগের পরিচালক প্যাসকেল অ্যালোটি বলেছেন, বন্ধ্যাত্ব প্রতিরোধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে লিঙ্গ সমতা এবং প্রজনন অধিকারের উপর জোর দিয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/কামাল