সম্প্রীতি এক ঘোষণায় হলিউডের বিনোদন জগতে রাজ করা সংস্থা ওয়ার্নার ব্রাদার্স ডিসকভারির ফিল্ম ও স্ট্রিমিং ব্যবসা কিনে নেওয়ার কথা জানিয়েছিল নেটফ্লিক্স। গত শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। প্রায় ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে হচ্ছে হওয়া চুক্তিটি ফিল্ম এবং টেলিভিশন জগতে বিরাট একটি পরিবর্তন আসতে চলেছে সে কথা বলাই বাহুল্য।
তবে চুক্তিটি কার্যকর হতে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন লাগবে। বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনেক বড় নিয়ন্ত্রকে হিসেবে কাজ করছেণ
যদিও ট্রাম্প এখনো প্রকাশ্যে এই চুক্তি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। এই চুক্তি নিয়ে হোয়াইট হাউসে গভীর সংশয় রয়েছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) ট্রাম্প প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, এই চুক্তি নিয়ে হোয়াইট হাউসে গভীর সংশয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নেটফ্লিক্স ও ওয়ার্নার ব্রাদার্স ডিসকভারি (ডব্লিউবিডি) জানিয়েছে, তারা ১২ থেকে ১৮ মাসের মধ্যে প্রক্রিয়া শেষ করার আশা করছে। শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার ছাড়পত্র পাওয়ার পর তারা বাকি কাজ সারার প্রস্তুতি নেবেন।
যুক্তরাষ্ট্রে এই চুক্তি বিচার বিভাগ এবং বাণিজ্য কমিশনের প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে পারে। তবে এটি সম্প্রচার নেটওয়ার্ক জড়িত নয় বলে গণযোগাযোগ কমিশনের অনুমোদন লাগবে না।
নেটফ্লিক্সের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা অনুমোদন পাওয়া নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী। এমনকি চুক্তি বাতিল হলে ডব্লিউবিডিকে ৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার জরিমানাও দিতে রাজি হয়েছে তারা।
নেটফ্লিক্সের সহ-প্রধান নির্বাহী টেড সারানদোস বলেন, আমরা পুরো প্রক্রিয়া নিয়ে খুবই আত্মবিশ্বাসী। এটি ভোক্তা, উদ্ভাবন, কর্মী, নির্মাতাসহ সবার জন্যই ভালো। নেটফ্লিক্স ও ওয়ার্নার ব্রাদার্সের কাজ সবার জন্যই পরিপূরক।
নেটফ্লিক্স প্রাথমিকভাবে এইচবিও ম্যাক্স ও ওয়ার্নার ব্রাদার্সের স্টুডিও আলাদা প্রতিষ্ঠান হিসেবে চালাবে। ওয়ার্নার ব্রাদার্সের চলচ্চিত্র প্রথমে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে। একটি নির্দিষ্ট সময় শেষে সেটি নেটফ্লিক্সে আসবে।
ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে এলিসন পরিবারকে পছন্দ করেন। তিনি এই চুক্তির পথে বাঁধা হবেন না। যদিও ট্রাম্প বিরোধিতা করলেও চুক্তি আটকে যাবে এমন নিশ্চয়তা নেই। প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প প্রশাসন এটিঅ্যান্ডটির টাইম ওয়ার্নার অধিগ্রহণ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আদালত সেই প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে দেয়।
লেখক সংগঠন এবং প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের সংগঠনসহ হলিউডের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও এই চুক্তির বিরোধিতা করছে। তারা বলছে, এতে চাকরি ও প্রতিযোগিতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের আইনপ্রণেতারাও বিরোধিতা করছেন। সেনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন বলেন, ‘এটি একচেটিয়া বাজার তৈরির ভয়াবহ দৃষ্টান্ত হবে, যা মানুষের খরচ বাড়াবে ও বিকল্প কমিয়ে দেবে।’
নেটফ্লিক্স বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ৩০ কোটির বেশি গ্রাহক নিয়ে এগোচ্ছে। ওয়ার্নার ব্রাদার্স ডিসকভারি রয়েছে প্রায় ১২ কোটি ৮০ লাখ গ্রাহক। দুটি প্রতিষ্ঠান এক হলে তারা যে অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে যাবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।