অ্যাকশন–ড্রামা ঘরানার সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘ধুরন্ধর’–এ অভিনয় করে নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছেন অক্ষয় খান্না। পাকিস্তানি ডাকাত রেহমান চরিত্রে তাঁর উপস্থিতি, সংলাপ আর শরীরী ভাষা দর্শক ও সমালোচকের নজর কাড়ছে সমানভাবে। এরই মধ্যে চরিত্র পরিচয়ের নাটকীয় দৃশ্যে অক্ষয়ের একটি নাচ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে ভারত–পাকিস্তানজুড়ে।
নেটদুনিয়ায় ঘুরে বেড়ানো মন্তব্যে অনেকেই বলছেন, এই নাচের ভঙ্গিতে স্পষ্ট দেখা গেছে অক্ষয়ের বাবা, বলিউডের এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা বিনোদ খান্নার ছায়া। কারণ, ১৯৮৯ সালে পাকিস্তানের লাহোরে একটি চ্যারিটি অনুষ্ঠানে বিনোদ খান্না, রেখা, ইমরান খান, জাভেদ মিয়াঁদাদ একসঙ্গে নেচেছিলেন। সেই পুরোনো ভিডিওটি আবার প্রকাশ্যে আসার পর অনেকে দুই নাচের ভঙ্গির মিল খুঁজে পাচ্ছেন। অনেকেই মজা করে লিখছেন, “বাপকে নকল করে বিখ্যাত ছেলে!” কেউ আবার বলছেন, “বাবা–ছেলের স্বভাবগত মিলই হয়তো এমন। নকল বলাটা ঠিক নয়।”
শুটিংসেট থেকেই এসেছে আরও তথ্য। অক্ষয়ের সহ–অভিনেতা ড্যানিশ পান্ডোরা জানান, ভাইরাল হওয়া নাচটি কোনোভাবেই সাজানো ছিল না। তাঁর ভাষায়, “লেহ–লাদাখে গানটির শুটিং চলছিল। পরিচালক আদিত্য স্যার শট বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন। হঠাৎ অক্ষয় স্যার জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমি কি নাচতে পারি?’ আদিত্য বললেন, ‘যা খুশি করো।’ এক টেকেই হয়ে গেল। কেউই ভাবিনি এটা এত ভাইরাল হবে।”
গানটির কোরিওগ্রাফার বিজয় গাঙ্গুলিও জানালেন, দৃশ্যে অক্ষয়ের শুধু হেঁটে আসার কথা ছিল। কিন্তু তিনি নিজেই প্রস্তাব দেন, নাচ করলে দৃশ্যটি আরও প্রাণবন্ত হবে। কীভাবে নাচবেন—তা কেউ জানতেন না। সবটাই ছিল তাঁর স্বতঃস্ফূর্ততার ফল।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নাচটি নিয়ে দুই ধরনের আলোচনা চলছে। একদল মনে করছে, অক্ষয় পুরোনো ভিডিওতে দেখা বিনোদ খান্নার নাচ হুবহু অনুকরণ করেছেন। তাঁদের মতে, হাত নাচানোর ধরন থেকে শরীর দোলানোর ছন্দ—সবই মিল। অন্যদিকে আরেক পক্ষের মতে, এটি নকল নয়, প্রাকৃতিক মিল। বাবা–ছেলের ভঙ্গিমায় মিল থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। বরং অক্ষয় হয়তো সেই পুরোনো ভিডিওটির অস্তিত্বই জানতেন না।
এদিকে অভিনয়েও নতুন করে নজর কাড়ছেন অক্ষয় খান্না। দর্শক–সমালোচকদের মতে, ‘ছাবা’য় ‘আওরঙ্গজেব’ চরিত্রে তাঁর যে সংযম, তীব্রতা আর নীরব শক্তি দেখা গিয়েছিল, ‘ধুরন্ধর’–এ তা আরও গভীর ও পরিপাটি। চোখের ভাষা, সংলাপ বলার ছন্দ আর ছোট ছোট মুখাভিনয়ে রেহমান ডাকাতকে তিনি একেবারে জীবন্ত করে তুলেছেন। সমালোচকেরা বলছেন, ফ্রেমে অক্ষয় থাকলে অন্যদের নজর কাড়তে বাড়তি চেষ্টা করতে হয়, আর তিনি কেবল স্বাভাবিক অভিনয়েই দর্শককে টেনে রাখেন।
সব মিলিয়ে ‘ধুরন্ধর’–এর সফলতায় অনেকে বলছেন, ২০২৫ সাল অক্ষয় খান্নার ক্যারিয়ারের উজ্জ্বলতম সময়গুলোর একটি হয়ে থাকবে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক