রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন এ বছর অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। নির্বাচন কমিশন পরপর চারবার তফসিল পরিবর্তন করে অবশেষে নতুন তারিখ ঘোষণা করেছে।
বুধবার রাতে কমিশনারদের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় আগামী বছরের ২১ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ধারাবাহিকভাবে তারিখ বদলানোয় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
শিক্ষাথীরা বলেন,‘শিক্ষার্থীদের আবেগ, অনুভুতির জায়গা শিক্ষার্থী সংসদ। শিক্ষার্থীদের দাবি ছাত্রসংসদ দিতে হবে যা আমরা শুরু থেকেই প্রশাসনকে বার বার জানিয়ে আসছিলাম। প্রশাসন বরাবরই শিক্ষার্থীদের ভাষা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের স্পষ্ট দাবি তফসিল অনুযায়ী নির্ধারিত তারিখ ২৪ ডিসেম্বরেই ছাত্রসংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।’
জানা গেছে, এর আগে চলতি বছরের ১৮ নভেম্বর প্রথম তফসিল ঘোষণা করা হয়, যেখানে ২৯ ডিসেম্বর ভোটের তারিখ নির্ধারিত ছিল। পরে দ্বিতীয় দফায় তফসিল সংশোধন করে ভোটের দিন নির্ধারণ করা হয় ২৪ ডিসেম্বর। এরপর ৩ ডিসেম্বর মনোনয়ন ফর্ম বিতরণ ও জমাদানের তারিখ পরিবর্তন করা হলেও ভোটের দিন অপরিবর্তিত থাকে। সর্বশেষ চতুর্থবারের মতো ভোটের তারিখ পরিবর্তন করে নতুন তফসিল প্রকাশ করা হলো।
ভোটার তালিকায় একাধিক গুরুতর ক্রটি থাকার কারণে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে বলে জানায় কমিশন। এর আগে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৯ ডিসেম্বর কমিশনারদের কেউই নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না। এনিয়ে ক্ষোভ রয়েছে শিক্ষার্থীদের।
নতুন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১৬ নভেম্বর আচরণবিধির খসড়া প্রকাশ করা হবে এবং ১৮ নভেম্বর সিন্ডিকেট সভায় এর চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে। এরপর ১৩ ডিসেম্বর প্রকাশ করা হবে খসড়া ভোটার তালিকা, যা নিয়ে আপত্তি গ্রহণ করা হবে ১৪, ১৫ এবং ১৬ ডিসেম্বর তিন দিনব্যাপী। ১৭ ডিসেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পর ২০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে মনোনয়নপত্র বিতরণ ও দাখিল। মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন ঠিক করা হয়েছে ২১ ডিসেম্বর।
২২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র যাচাই–বাছাই শেষে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে এবং ২৩ ডিসেম্বর গ্রহণ করা হবে আপত্তি। একই দিনে আপত্তি নিষ্পত্তি শেষে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকাও প্রকাশ করা হবে। সর্বশেষ ২১ জানুয়ারি ২০২৬ অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ, গণনা এবং ফলাফল ঘোষণা।
এদিকে ২৪ ডিসেম্বর নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ কয়েকটি ছাত্র সংগঠন আন্দোলন মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন অবরোধ করেও নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন ঠেকাতে পারেনি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. শাহ জামান বলেন, ‘ভোটার তালিকার বিভিন্ন ক্রুটি এখনো সংশোধন করা যায়নি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর প্রয়োজনীয় তথ্য ও সহযোগিতা না পাওয়ায় ২৪ ডিসেম্বর ভোট আয়োজন সম্ভব হয়নি। সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।’
বিডি-প্রতিদিন/আশফাক