ঢাকায় গৃহকর্মীর ছুরিকাঘাতে নিহত মা লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা লায়লা বিনতে আজিজের (১৫) মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মঙ্গলবার জোহরের নামাজের পর নবাব সিরাজ–উদ–দৌলা সরকারি কলেজ মাঠে জানাজা শেষে শহরের গাড়ীখানা গোরস্থানে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়।
নিহত লায়লা আফরোজ গৃহিণী এবং তার মেয়ে নাফিসা পড়তেন মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণিতে। নাফিসার বাবা এম জেড আজিজুল ইসলাম উত্তরা সানবীমস স্কুলের পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক। তার চাকরি ও মেয়ের পড়াশোনার কারণে পরিবারটি মোহাম্মদপুরের শাজাহান রোডের ৩২/২/এ বাড়ির সপ্তম তলায় বাস করতেন।
সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তাদের বাসা থেকে মা–মেয়ের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সুরতহাল শেষে লাশ পাঠানো হয় সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার ভোর ৫টায় লাশবাহী ফ্রিজিং ভ্যানে করে মরদেহ পৌঁছায় নাটোরের দক্ষিণ বড়গাছায় নিজেদের বাসায়।
মরদেহ পৌঁছানোর পর হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। একসময় লায়লাদের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করা নাটোরের রুবী খাতুন ভ্যানের পাশে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। রুবীর কান্না দেখে উপস্থিত মানুষের চোখেও পানি চলে আসে।
নিহত লায়লা আফরোজের ভাই ফরহাদ হোসেন জানান, ঘটনার আগের রাতে বড় বোনের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা হয়। লায়লা বলেছিলেন, বাসার চাবি খুঁজে পাচ্ছেন না। এ নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন ছিলেন, বিশেষ করে নতুন কাজের মেয়েটি আসার পর। সেটিই ছিল তাদের শেষ কথা।
স্থানীয় প্রতিবেশী মামুন শিকদার বলেন, ‘লায়লাদের পরিবার খুব শান্ত-স্বভাবের। কখনো কাউকে কষ্ট দিয়ে কথা বলেছে এমন কিছু আমরা শুনিনি। এমন নৃশংস ঘটনা মেনে নেওয়া কঠিন।’
এলাকাবাসী হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন ও দায়ীদের দ্রুত বিচার দাবি করেছেন।
উল্লেখ্য, মাত্র চার দিন আগে গৃহকর্মীটি ওই বাসায় কাজে যোগ দেয়। সোমবার বোরকা পরে বাসায় ঢুকে মা–মেয়েকে হত্যা করে সে। এরপর স্কুল ড্রেস ও মাস্ক পরে বেরিয়ে যায় বলে তদন্তে জানা গেছে।
বিডি-প্রতিদিন/আশফাক