নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এ.কে.এম সিরাজ উল্যাহর বাড়িতে চোর সন্দেহে এক দিনমজুরকে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনায় এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
গ্রেফতার আসামির নাম মো. লুৎফুর রহমান ওরফে লাতু (৫৯)। তিনি উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের যাদবপুর গ্রামের তাজুল ইসলাম মাস্টার বাড়ির মৃত নজির আহাম্মদের ছেলে।
পিবিআই নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) আর এম ফয়জুর রহমান জানান, সোমবার সন্ধ্যায় যাদবপুর গ্রাম থেকে অভিযান চালিয়ে আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়। আদালত শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
নিহত ব্যক্তি মো. আলাউদ্দিন (২৬) উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাটইয়া গ্রামের মহিন উদ্দিনের ছেলে ছিলেন। তিনি পেশায় দিনমজুর ছিলেন।
পিবিআই জানায়, ২০২৪ সালের ১ মে রাতে নরোত্তমপুর ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যানের বাড়ির ঘাটলায় আলাউদ্দিনকে চোর সন্দেহে আটক করেন কেয়ারটেকার লাতু। পরে চেয়ারম্যানের নির্দেশে লাতুসহ অন্যরা লোহার রড, লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে মারধর করে গুরুতর জখম করেন। আহত আলাউদ্দিন গভীর রাতে পালিয়ে গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে পাঁচদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ৬ মে তিনি মারা যান।
পিবিআই জানিয়েছে, নিহতের পরিবার প্রথমে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করেছিল। পরে নিহতের মায়ের দায়েরকৃত এজাহারের ভিত্তিতে কবিরহাট থানায় হত্যা মামলা রুজু হয় এবং ১৩ জুন লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়।
এসপি ফয়জুর রহমান আরও জানান, দীর্ঘ ১৭ মাসের তদন্তে আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এবং মামলার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। পিবিআই অন্য জড়িত আসামিদের গ্রেফতারে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/মাইনুল