ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি) এবং ‘কোলোকাল’ প্রকল্পের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত দুই দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড চেঞ্জিং ক্লাইমেট ২০২৫’ শেষ হয়েছে। ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৈশ্বিক কৌশল ও স্থানীয় বাস্তবতার সমন্বয়’—এ প্রতিপাদ্যে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে অংশ নেন দেশি-বিদেশি গবেষক, উন্নয়নকর্মী, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন অঞ্চলের স্থানীয় প্রতিনিধিরা।
সম্মেলন শুরু হয় ২০ নভেম্বর। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আইইউবির উপাচার্য অধ্যাপক ম. তামিম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড্যানিয়েল ডব্লিউ. লুন্ড এবং স্কুল অব এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড লাইফ সায়েন্সেসের ডিন ড. কে. আয়াজ রাব্বানী।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জলবায়ুবিষয়ক গবেষক ড. এ. আতিক রহমান, ড. শাহপার সেলিম ও ড. ফয়সাল কবীর। তাঁরা স্থানীয় জ্ঞানকে নীতিনির্ধারণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির কাজে আরও বেশি ব্যবহার করার ওপর গুরুত্ব দেন।
খুলনার ‘রূপান্তর থিয়েটার’ পরিবেশ ও জলবায়ু ন্যায়বিচার নিয়ে পটগান পরিবেশন করে। পরিবেশ দূষণ, বিশেষ করে প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে সংগীত পরিবেশন করে মুয়ীজ মাহফুজ ব্যান্ড। দিন শেষে আইইউবির এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা জলবায়ু অর্থায়ন সংকট, উন্নয়নপ্রক্রিয়ার চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন ছিল গবেষণা-উপস্থাপনার কেন্দ্রবিন্দু। মৌখিক এবং পোস্টার সেশনে গবেষকেরা প্রশাসনিক ব্যবস্থা, আদিবাসী জ্ঞান, টেকসই কৃষি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও অভিযোজন কৌশল নিয়ে তাঁদের গবেষণা তুলে ধরেন। পাশাপাশি কয়েকটি কর্মশালা ও সাইড ইভেন্টে স্থানীয়ভাবে পরিচালিত অভিযোজন কার্যক্রমের চ্যালেঞ্জ, ঝুঁকি ও সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
খুলনা ও সাতক্ষীরার দলিত ও মুণ্ডা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা প্রকৃতিনির্ভর সমাধান, ঝুঁকি ও অভিজ্ঞতার কথা শোনান। সিমিট, সুশীলন ও আইইউবির ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইক্যাড)-এর যৌথ সেশনে স্থানীয়ভাবে পরিচালিত অভিযোজন (লোকালি লেড অ্যাডাপটেশন) কৌশল তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশ ও উগান্ডার ‘কোলোকাল’ ফেলোরা নিজ নিজ গবেষণা উপস্থাপন করেন। ‘নির্মল বাংলাদেশ’ সমুদ্রবিদ্যা ও সহনশীলতা বৃদ্ধির ওপর একটি কর্মশালা পরিচালনা করে।
এবারের সম্মেলনে তরুণদের অংশগ্রহণে বিশেষ জোর দেওয়া হয়। ‘ইনফ্লুয়েন্সার্স’ গ্রুপের কর্মশালায় তরুণ অংশগ্রহণকারীরা শিখেছেন বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে কীভাবে জলবায়ু-অ্যাডভোকেসিতে নিজেদের ভূমিকা আরও শক্তিশালী করা যায়। হংকং ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির একটি সেশনে আন্তঃবিষয়ক জননীতি–কেন্দ্রিক স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হয়।
সম্মেলনের আংশিক অর্থায়ন করেছে নরওয়েজিয়ান এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশনের (নরাড) সহযোগিতায় পরিচালিত ‘কোলোকাল’ প্রকল্প। বাংলাদেশ, নেপাল, উগান্ডা ও মোজাম্বিকের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মিলে প্রকল্পটি স্থানীয়ভাবে পরিচালিত জলবায়ু অভিযোজন গবেষণা ও শিক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে।
বিডি-প্রতিদিন/সুজন