দুই ওভারে টার্গেট ১৬ রান। ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে প্লেড অন হন নুরুল হাসান সোহান। সমীকরণ ১১ বলে ১৪ রান। জমে ওঠে ম্যাচ। সিমিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন এসেই চার-ছক্কার ঝড় তোলেন। সাইফুদ্দিনের ৭ বলে ২ চার ও এক ছক্কায় অপরাজিত ১৭ রানের ‘ক্যামিও’ ইনিংসে বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জিতে সিরিজে সমতা আনে। উইনিং শটটি অবশ্য মারেন শেখ মেহেদি। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ ২ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার।
টার্গেট ১৭১ রান। লিটন বাহিনীর স্কোর তখন ২ উইকেটে ৮৮। লিটলের শট বলে পুল খেলেন লিটন। ডিপ মিড উইকেটে এক হাতে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন দেলানি। ক্যাচ ধরেও ভারসাম্য রাখতে না পেরে মাটিতে পড়ে যান। পড়ার আগে অবশ্য শূন্যে বল ছুড়ে দেন। এরপর ক্যাচটি ধরে আউটের উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন। কিন্তু টিভি রিপ্লেতে দেখা গেছে দেলানি যখন পুনরায় ক্যাচ ধরেন, তখন তার ট্রাউজারের পেছনে থাকা রুমাল দড়ি স্পর্শ করে। আম্পায়ার নট আউট দেন। বেঁচে যান লিটন। এরপর তেড়েফুড়ে ব্যাটিং করেন টাইগার অধিনায়ক লিটন। ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন ৩৭ বলে ৩ ছক্কা ও ৩ চারে। ১১৯ ম্যাচে এটা ১৬তম হাফ সেঞ্চুরি। সবশেষ হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন চলতি বছর টি-২০ এশিয়া কাপে, আবুধাবীতে হংকংয়ের বিপক্ষে।
প্রথম টি-২০ ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ধারেকাছেও যেতে পারেননি লিটনরা। ব্যাটিং ও বোলিং দুই বিভাগে ব্যর্থ ছিল লিটন বাহিনী। ফল ৩৯ রানে হার। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি-২০ ম্যাচে টানা দ্বিতীয় হার এবং সব মিলিয়ে টানা চতুর্থ। গত অক্টোবরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল। আইরিশদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ হেরে যায় চরম ব্যাটিং ব্যর্থতায়। অথচ টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছিল সফরকারীদের। টি-২০ সিরিজের প্রথমটি হেরে যাওয়ায় পিছিয়ে পড়ে লিটন বাহিনী। সিরিজে সমতা আনতে মরিয়া টাইগাররা তিন পরিবর্তন নিয়ে খেলেছেন। দলে ফেরেন স্পিন অলরাউন্ডার শেখ মেহেদি হাসান, সিমিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ও উইকেটরক্ষক ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান। বাদ পড়েন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন, উইকেটরক্ষক ব্যাটার জাকের আলি অনীক ও বাঁ-হাতি পেসার শরীফুল ইসলাম। তিন পরিবর্তনের একাদশ নিয়ে টস হেরে ফিল্ডিং করে লিটন বাহিনী।
আয়ারল্যান্ড প্রথম ম্যাচে ১৮১ রান করেছিল। গতকালের শুরুটা ছিল প্রথম ম্যাচের চেয়ে আগ্রাসী। প্রথম ম্যাচে ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতে রান করেছিল ১ উইকেটে ৪৮। অধিনায়ক পল স্টার্লিং ও টিম টেক্টরের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেটে ৭৫ রান করে। দুই ওপেনার ৫৭ রান যোগ করে বিচ্ছিন্ন হন। বাংলাদেশের বিপক্ষে আইরিশদের উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ রান। আগের সর্বোচ্চ ৪০। প্রথম ম্যাচে আইরিশদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন হ্যারি টেক্টর। দ্বিতীয় ম্যাচে সফরকারীদের পক্ষে সবাই কমবেশি রান করেছেন। কিন্তু হাফসেঞ্চুরির কোনো ইনিংস নেই। সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন লরকান টাকার। ওপেনার টিম টেক্টর ৩৮ ও অধিনায়ক স্টার্লিং ২৯ রান করেন। আইরিশদের স্কোর থামিয়ে দেন অফ স্পিনার মেহেদি। প্রথম ম্যাচে সাজঘরে বসেছিলেন। রিশাদের ব্যর্থতায় একাদশে ফিরেই উইকেট নেন ৩টি। এক ওভারে নেন ২ উইকেট। মেহেদি নতুন বলে ওপেন করেন। আয়ারল্যান্ডের ইনিংস শেষে মেহেদির স্পেল ৪-০-২৫-৩। একটি করে উইকেট নেন দুই পেসার তানজিম সাকিব ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আয়ারল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৭০/৬ (স্টার্লিং ২৯, টিম টেক্টর ৩৮, হ্যারি টেক্টর ১১, টাকার ৪১, কালিৎজ ৭, ডকরেল ১৮, ডেলানি ১০*; মেহেদি ৪-০-২৫-৩, নাসুম ৪-০-৩১-০, তানজিম ৩-০-১৭-১, সাইফ উদ্দিন ৪-০-৪০-১, মুস্তাফিজ ৪-০-৩৯-০, সাইফ হাসান ১-০-৭-০)
বাংলাদেশ: ১৯.৪ ওভারে ১৭৪/৬ (পারভেজ ৪৩, তানজিদ ৭, লিটন ৫৭, সাইফ হাসান ২২, হৃদয় ৬, সোহান ৫, সাইফ উদ্দিন ১৭*, মেহেদি ৪*; হামফ্রিজ ৪-০-৩৮-০, অ?্যাডায়ার ৪-০-৩৬-২, ম্যাককার্থি ৪-০-২৭-০, লিটল ৩.৪-০-৩৯-০, ডেলানি ৪-০-২৮-২)