যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি ও শেখ রেহানার মেয়ে। রাজধানীর পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দ নিয়ে দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে তাকে। বাংলাদেশের আদালতে কোনো ব্রিটিশ এমপিকে দণ্ড দেওয়ার ঘটনা এই প্রথম।
গতকাল দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মো. রবিউল আলম দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় এ রায় দেন। এ রায় নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের বেশির ভাগ মিডিয়া।
আমাদের যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি আ স ম মাসুম জানান, টিউলিপ সিদ্দিক এক বিবৃতিতে প্লট বরাদ্দ দুর্নীতি মামলায় আনা অভিযোগ অস্কীকার করেছেন। তার রাজনৈতিক দল লেবার পার্টিও এক বিবৃতিতে বলেছে, এই রায়কে তারা স্বীকৃতি দিতে পারে না। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকায় এবং বাংলাদেশ টু বি ক্যাটাগরির দেশ হওয়ায় টিউলিপের যুক্তরাজ্য থেকে প্রত্যর্পণ হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে দুদকের করা মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন আদালত। মামলায় শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা ও তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ছাড়া সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, রাজউক ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ১৪ জন কর্মকর্তা আসামি ছিলেন। ছাত্র-জনতার অভুত্থ্যানে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনার স্বজনপ্রীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসতে থাকে। এই তালিকায় নাম আসে টিউলিপ সিদ্দিকেরও। ডেভেলপারের কাছ থেকে লন্ডনে ৭ লাখ পাউন্ড দামের একটি ফ্ল্যাট ‘উপহার’ পাওয়ার খবর নিয়ে সমালোচনার মধ্যে গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যে সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে ইস্তফা দেন টিউলিপ সিদ্দিক।
টিউলিপকে বাংলাদেশে ফেরানো প্রায় অসম্ভব : আমাদের যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি আ স ম মাসুম জানান, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকায় এবং বাংলাদেশ টু বি ক্যাটাগরির দেশ হওয়ায় টিউলিপের যুক্তরাজ্য থেকে প্রত্যর্পণ হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও ঢাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের নোংরা রাজনীতির দ্বারা আমি বিচলিত হব না, আমার একমাত্র মনোযোগ হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেটের আমার আসন।
লেবার পার্টি এক বিবৃতিতে জানায়, এই রায়কে তারা স্বীকৃতি দিতে পারে না। পার্টির বক্তব্য টিউলিপ ন্যায় বিচার পাননি এবং অভিযোগের বিবরণ তাকে কখনো সরবরাহ করা হয়নি। যদিও তার আইনজীবীরা বারবার অনুরোধ করেছেন। পার্টি আরও জানায়, তিনি এখনো দলের সদস্য এবং হাউস অব কমন্সে লেবার হুইপ বজায় রেখেছেন।