লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে সবুজ ইসলাম (২৫) নামের এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। গুলিতে নিহত হওয়ার পর বিএসএফ সদস্যরা সবুজের মরদেহ টেনে হেঁচড়ে নিজেদের এলাকায় নিয়ে যায় এবং পরে ভারতীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বৃহস্পতিবার ভোর রাত চারটার দিকে বাংলাদেশ-ভারতের শূন্যরেখায় এ ঘটনা ঘটে।
বিজিবি ও স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার মাথাভাঙ্গা থানার ফুলকাডাবরী খালপাড়া এলাকার বিপরীতে পাটগ্রামের জগতবেড় ইউনিয়নের পচাভান্ডার সীমান্ত এলাকা। ভোর রাতে প্রধান পিলার ৮৬৪-এর ৫ নম্বর উপপিলারসংলগ্ন শূন্যরেখায় ৮ থেকে ১০ জন গরুপারাপারকারী অবস্থান করলে ভারতের রাণীনগর ১৬৯ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের চেনাকাটা ক্যাম্পের টহল দল তাদের দিকে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান সবুজ ইসলাম।
নিহত সবুজ জগতবেড় ইউনিয়নের পচাভান্ডার গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে। স্থানীয় একটি বাজারে তার ছোট মুদি দোকান ছিল। এক বছর আগে বাবা মারা যান। দুই বছর আগে বিয়ে করা সবুজের এক বছরের একটি সন্তান রয়েছে।
ঘটনার পর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৬১ ব্যাটালিয়নের শমশেরনগর ক্যাম্প থেকে টহল দল সীমান্তে যায়। সকাল ১০টা ১০ মিনিটে চেনাকাটা ক্যাম্পের পাশে দুই বাহিনীর মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ১৫ মিনিটের বৈঠকে নিহতের ঘটনায় বিজিবি তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং লাশ ফেরতের দাবি তোলে। তবে কোনো সমঝোতা ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়। বিএসএফ বৈঠকে জানায়, সবুজের মরদেহ থানা–পুলিশের কাছে রয়েছে, ময়নাতদন্ত শেষে তা হস্তান্তর করা হবে।
জগতবেড় ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য অহেদ আলী বলেন, শমশেরনগর বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার ভোর রাত সাড়ে ৪টায় আমার মোবাইল নম্বরে কল দিয়ে বলে, বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি একজন গরু পারাপারকারী মারা গেছে। আপনি ঘটনাস্থলের কাছে আসেন। আমি অসুস্থ এ জন্য যাইনি। সকালে সবুজদের বাড়িতে গিয়েছি, বাড়িতে তার মা, স্ত্রী কেউ নাই।
বিজিবির শমশেরনগর কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার কামাল উদ্দিন বলেন, ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছি। মরদেহ ফেরত চাওয়া হয়েছে। বিএসএফ বলেছে, ময়নাতদন্ত শেষে লাশ ফেরত দেওয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/সুজন