হকিতে সব ধারণা পাল্টে দিয়েছেন বাংলাদেশের যুবারা। বিশ্বকাপ যে কোনো আসরে প্রথমবার খেলছে বাংলাদেশ। আর তা অনূর্ধ্ব-২১ দিয়ে। যুবারা স্বপ্নের বিশ্বকাপ শুরুও করেননি। অথচ তার আগে তাদের নিয়ে কতই না হাসি-ঠাট্টা। কেউ বলেছেন বস্তার ওজন সামাল দিতে পারবে তো ছেলেরা। ওরা তো গোলে ভেসে যাবে। কেউ বা আবার বলেছেন কী আর হবে মাঠে নামার আগেই তো হেরে বসে আছে অনূর্ধ্ব-২১ দল। না, তিরস্কারের ভালোই জবাব দিয়েছেন ছেলেরা। গ্রুপে কোনো ম্যাচ জেতা না হলেও শক্তিশালী প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে সমান তালে যে লড়াই করেছে তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। অভিষেক বিশ্বকাপেই বাংলাদেশ দুর্দান্ত পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছে।
তিন ম্যাচে দুই হার ও এক ড্রতে বিশ্বকাপে নকআউট পর্বে খেলা বাংলাদেশের সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেছে। তবে প্রতি ম্যাচে যুবাদের মনোমুগ্ধকর স্ট্রিকওয়ার্ক প্রশংসিত হচ্ছে। গতকাল গ্রুপের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ মুখোমুখি হয়েছিল ফ্রান্সের বিপক্ষে। যারা আগের দুই ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়াকে ১১-১ ও অস্ট্রেলিয়াকে ৮-৩ গোলে হারায়। যুব বিশ্বকাপে সাবেক চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া আর দক্ষিণ কোরিয়া যখন ফ্রান্সের কাছে পাত্তা পায়নি। তখন বাংলাদেশকে নিয়ে কী ছেলে খেলাটা না খেলে এমনই আতঙ্কে ছিলেন অনেকে। না, ফ্রান্সকে প্রায় রুখেই দিয়েছিলেন আমিরুলরা। দুর্ভাগ্যক্রমে হেরে মাঠ ছাড়তে হয়েছে।
গতকাল ভারতে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২১ দল ২-৩ গোলে হেরে যায় ফ্রান্সের কাছে। আক্ষেপ ম্যাচে প্রথম গোল হজম করতে হয়েছে পেনাল্টি স্ট্রোক থেকে। সাত মিনিটে টম গেইলার্ড ফ্রান্সকে এগিয়ে রাখেন। প্রথম কোয়ার্টারে ফ্রান্স পাঁচ পেনাল্টি কর্নার পেলেও বাংলাদেশ পায়নি। ২৮ মিনিটে ম্যাচে সমতায় ফেরে বাংলাদেশ। মো. আবদুল্লাহ ফিল্ড গোল করেন। দ্বিতীয় কোয়ার্টারে স্কোর ছিল ১-১। ৩২ মিনিটে ফ্রান্সের গ্যাবিন লোরাজুরি ব্যবধান ২-১ করেন। ছয় মিনিট পর ফ্রান্সকে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন ডেমস লিডিয়ার্ড। ৫৫ মিনিটে বাংলাদেশের গোল্ডেন বয় আমিরুল ইসলাম গোল করে ব্যবধান কমালেও হার এড়াতে পারেননি।
বাংলাদেশ গ্রুপের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৫-৩, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ৩-৩ ড্র করে। তিন ম্যাচে ১১ গোল হজম করলেও দিয়েছে আটটি। যার মধ্যে দুই হ্যাটট্রিকসহ আমিরুলের সাত গোল। গ্রুপ পর্ব থেকে সামনে আর এগোতে না পারলেও অভিষেক বিশ্বকাপেই নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছেন যুবারা।