ইলেকশন ওয়ার্কিং অ্যালায়েন্সের (ইডব্লিউএ) আত্মপ্রকাশ ও গোলটেবিল বৈঠকে আলোচনায় প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে সুশীল সমাজসহ সবাইকে সামনে এসে ভূমিকা রাখতে হবে।
আজ বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে ইলেকশন ওয়ার্কিং অ্যালায়েন্স (EWA)-এর আত্মপ্রকাশ ও “জাতীয় নির্বাচন ২০২৬: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়” শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে অ্যালায়েন্সের কো-চেয়ারম্যান ড. গোলাম রহমান ভূঁইয়া ইলেকশন ওয়ার্কিং অ্যালায়েন্স গঠনের প্রয়োজনীয়তা ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে বলেন। তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন কেবল নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে সম্ভব নয়—এতে সরকারি প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, পর্যবেক্ষক সংগঠন ও নাগরিক সমাজসহ সকল অংশীজনের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। এই দায়িত্ববোধ থেকেই নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিবন্ধিত পর্যবেক্ষক সংগঠনসমূহ, বিভিন্ন উন্নয়ন ও সেবা সংস্থা, পেশাজীবী ও নাগরিক সমাজের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে ইলেকশন ওয়ার্কিং অ্যালায়েন্স (EWA)। EWA এর মূল উদ্দেশ্য হলো জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে অবাধ, স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সংস্কৃতি গড়ে তোলা এবং বাংলাদেশে সুশাসন ও জবাবদিহিমূলক শাসন প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের বিধান অনুসারে আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করাও অ্যালায়েন্সের অন্যতম দায়িত্ব। তিনি অ্যালায়েন্স এর সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেন।
গোলটেবিল আলোচনায় বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব প্রফেসর ড. মো. শরিফুল আলমের সভাপতিত্বে অবস্থানপত্র উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মো. শাফিউল ইসলাম এবং প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট রাষ্ট্র বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সাবেক চাকসু ভিপি অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, সরকারের সাবেক সচিব মো. আবদুল কাইয়ূম, সাবেক জেলা ও সেশন জজ ও কলামিস্ট ইকতেদার আহমেদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের সকারী মহাসচিব মাওলানা আবু নুমান, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি, এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসরিন সুলতানা মিলি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আব্দুল কাইয়ূম, খেলাফত মজলিশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক প্রফেসর কাজী মিনহাজুল আলম, আপ বাংলাদেশের প্রধান সংগঠক নাঈম আহমাদ, এনটিভি এর প্রধান প্রতিবেদক করামুল হক সায়েম, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক মিজ মিলি রহমান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রকৌশলী মারদিয়া মমতাজ প্রমূখ।
প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, অভ্যন্তরীণ সংকট ও বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা থেকে উত্তরণের জন্য আগামী জাতীয় নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য রাজনৈতিক ঐক্য গঠন এবং একটি অনুকূল নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি অপরিহার্য। তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলো ইস্যুভিত্তিক আলোচনায় না গিয়ে যেকোনো মূল্যে নির্বাচনে জয়লাভের প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত, যা সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে বড় বাধা।
তিনি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তাঁর মতে, বিদেশি শক্তির প্রভাব এবং বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচারের মাধ্যমে রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। একই দিনে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, প্রশাসন এখনো সম্পূর্ণভাবে নিরপেক্ষ নয় এবং গণমাধ্যমের ক্ষেত্রেও পূর্ববর্তী সরকারের প্রভাব বিদ্যমান।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন