বাংলাদেশ বিমানের জন্য উড়োজাহাজ কেনার প্রক্রিয়ায় ইউরোপীয় কোম্পানি এয়ারবাসকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে জানিয়েছেন জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোটজ। এমনকি এর প্রভাব ‘জিএসপি প্লাস’ আলোচনায়ও পড়বে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।
জার্মান রাষ্ট্রদূত মন্তব্য করেন, শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতার যে অপব্যবহার করেছে, আইনের শাসন নিশ্চিত করে তার বিচার জরুরি। তবে ইউরোপের দেশগুলো নীতিগতভাবে মৃত্যুদণ্ড সমর্থন করে না।
গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ‘ডিক্যাব টক’ শীর্ষক আলোচনায় জার্মান রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেন।
জার্মানির রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাবসায়িক অংশীদার এবং আশা করি এই সম্পর্কের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। এয়ারবাস একটি চমৎকার পণ্য, বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো দ্রুত বর্ধমান উড়োজাহাজ বাজারে। যদিও আমি উড়োজাহাজ শিল্পের প্রতিনিধি নই, তবে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি উত্তম বিকল্প।’
তিনি উল্লেখ করেন, দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো বিভিন্ন ইস্যু যেমন- জিএসপি প্লাস আলোচনার পরিবেশকে প্রভাবিত করে। এয়ারবাস কেনার মতো বড় সিদ্ধান্তগুলোও আলোচনার মেজাজ নির্ধারণ করে। অবশ্যই এটি বাংলাদেশের সার্বভৌম সিদ্ধান্ত। তবে ব্যক্তিগত বা ব্যাবসায়িক জীবনের মতো, প্রতিটি সিদ্ধান্তের প্রভাব থাকে সামগ্রিক পরিবেশের ওপর।’
বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক হবে এমনটি প্রত্যাশা করেন রুডিগার লোটজ। এছাড়া আগামী নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হলে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও দুর্নীতি কমলে বিদেশি বিনিয়োগ আরও বাড়তে পারে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যেন শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারে, সহিংসতা থেকে বিরত থাকে। ভোটাররা যেন ভয়মুক্ত পরিবেশে মত প্রকাশ করতে পারেন এবং বিদেশে থাকা ভোটারদের অংশগ্রহণসহ ভোটের সঠিক গণনা হয়। যত বেশি ভোটের হার থাকে তত ভালো। ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ভোটদানও ইতিবাচক সংকেত।
বর্তমানে বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিরাপত্তা বিভাগ, আইনের শাসন, শ্রম পরিবেশ, প্রশাসনিক কাঠামোসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, দুর্নীতি হ্রাস এবং দক্ষ শাসন প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা আন্তর্জাতিক অংশীদাররা লক্ষ্য করছে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত