গ্রিসে অবৈধভাবে নৌপথে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করতে গিয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন প্রায় ৪০ জন বাংলাদেশি। তীব্র শীত ও ক্ষুধার পাশাপাশি মানব পাচারকারীদের নৌকায় পানি ভেবে পেট্রোল পান করায় তারা মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরই মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ দুজন হলেন সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার আবদুুস মিয়ার ছেলে শাকিব আহমেদ শুভ, একই জেলার জিতু উল্লাহর ছেলে সায়েম আহমেদ।
দূতাবাস জানায়, ২৬ নভেম্বর ছোট নৌকায় লিবিয়া থেকে তারা গ্রিস অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন। মাঝ সমুদ্রে তাদের প্লাস্টিকের তৈরি নৌকাটি ছিদ্র হয়ে পানি প্রবেশ করে। পথিমধ্যে তাদের কাছে কোনো খাবার ছিল না। তারা প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত ছিল। প্রায় দুই দিন খাবার না পেয়ে তারা পানি ভেবে বোতলে থাকা পেট্রোল পান করেন। এতে অনেকেই অচেতন হয়ে পড়েন। পরে গ্রিসের কোস্টগার্ড ও স্থানীয় পুলিশ তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এদিকে এথেন্সের এক্সার্খিয়া এলাকার একটি হাসপাতাল এ ঘটনায় বাংলাদেশ দূতাবাসকে অবহিত করলে দূতাবাস তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসাধীন বাংলাদেশিদের খোঁজখবর নেয়। দূতাবাসের প্রথম সচিব রাবেয়া বেগম হাসপাতালে গিয়ে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন ও চিকিৎসা ব্যবস্থার খোঁজ নেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, পেট্রোল পান করার কারণে তাদের অনেকের পাকস্থলী ও শ্বাসযন্ত্রে গুরুতর জটিলতা দেখা দিয়েছে। শারীরিক দুর্বলতা, পানিশূন্যতা ও হাইপোথার্মিয়ার কারণে চিকিৎসা আরও জটিল হয়ে উঠেছে। পেট্রোল পান করার কারণেই দুুজনের মৃত্যুসহ বাকি চারজনের অবস্থা গুরুতর। এ ছাড়াও একজনের কিডনিতে পেট্রোলের প্রভাব পড়ে। যার কারণে তার কিডনি ডায়ালাইসিস চলমান রয়েছে। বাকিদের অবস্থা শঙ্কামুক্ত থাকায় দুদিন পরে তাদের কে হাসপাতাল থেকে রিলিজ করে দেওয়া হবে। আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে তাদের মালাকাসা ক্যাম্পে প্রেরণ করা হবে। নিহত দুই যুবকের লাশ দেশে পাঠাতে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে দূতাবাস। এ ঘটনায় গ্রিসে অবস্থানরত প্রবাসীদের মধ্যেও ব্যাপক উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। মানবিক সহায়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দূতাবাস, গ্রিক পুলিশ ও হাসপাতাল প্রশাসন সমন্বিতভাবে কাজ করছে।