কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর তীরে বন্দরের সীমানা দিতে গিয়ে স্থানীয়দের প্রতিবাদের মুখে ফিরে যায় বিআইডব্লিউটিএ। নদীবন্দর সূত্র জানায়, চলতি বছরের ১ থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ চার শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদের মাধ্যমে দখলমুক্ত করে নদীর ৬৩ একর জমি। এরপর ২০১৯ সালের যৌথ জরিপ ম্যাপ অনুযায়ী, সেই এলাকায় উচ্চ ও টেকসই সীমানা পিলার স্থাপন, সাইনবোর্ড বসানো আর কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করতে চায় বিআইডব্লিউটিএ।
এসব কার্যক্রম শুরুর আগেই উত্তেজনা দেখা দিয়েছে বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাট এলাকায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিআইডব্লিউটিএ তাদের ব্যক্তিগত জমিতে জোর করে সীমানা নির্ধারণ করতে চাইছে। তারা আদালতের আদেশও মানছেন না। স্থানীয় সূত্র জানায়, কস্তুরাঘাট এলাকায় নদীবন্দরের সীমানা নির্ধারণে বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা আসবেন, এমন খবরে সকাল থেকেই স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হতে থাকেন। সকাল ৯টা থেকে বদরমোকাম, কস্তুরাঘাট ও পেশকারপাড়ার লোকজন গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এতে ওই এলাকার যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বেলা ১১টার দিকে একই জায়গায় কয়েক শ নারী-পুরুষ এক হয়ে মানববন্ধন করেন। পরে দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ, র্যাব, আনসারসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা কস্তুরাঘাট এলাকায় পৌঁছান। এরপর উত্তেজনা আরও বাড়ে। শেষ পর্যন্ত সীমানা নির্ধারণের কাজ বন্ধ করেই ফিরে যায় বিআইডব্লিউটিএ।
অবরোধকারীদের দাবি, উচ্ছেদ হওয়া স্থানের মধ্যে ব্যক্তিমালিকানাধীন খতিয়ানভুক্ত জমিও রয়েছে। কহিনুর আক্তার নামের এক নারী বলেন, ‘আমাদের খতিয়ান আছে, খাজনাও দিচ্ছি। ক্ষতিপূরণ না দিয়ে বা আলোচনা না করে ঘরবাড়ি ভাঙা ও কাঁটাতার দেওয়া যাবে না।’
কর্মসূচিতে থাকা জেলা যুবদলের প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. ইসমাইল বলেন, বিআইডব্লিউটিএর উচ্ছেদ করা জমিতে অসংখ্য মানুষের খতিয়ানভুক্ত জমি রয়েছে। উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে ৭৭ জন মামলা করেছেন।
কক্সবাজার নদীবন্দরের কর্মকর্তা মো. আবদুল ওয়াকিল বলেন, কিছু দখলদার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভাসমান লোকজনকে ব্যবহার করেছেন। হাই কোর্টের আদেশ নির্দিষ্ট কিছু দাগের জমিসংক্রান্ত। বন্দরের সীমানা নির্ধারণে তা বাধা নয়। মো. আবদুল ওয়াকিল আরও বলেন, জমি রক্ষায় পিলার বসানো জরুরি। তা না হলে পুনরায় দখল হয়ে যেতে পারে। ২০২৩ সালেও এমনটি হয়েছিল।