দেশে আবারও পিঁয়াজের দাম নিয়ে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে কেজিপ্রতি প্রায় ৩০-৪০ টাকা বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যের দাম। এতে সাধারণ ক্রেতাদের ওপর চাপ বেড়েছে, আর বাজারে অস্থিরতার কারণ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুই দিন আগেও যেখানে পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ১১০-১২০ টাকার মতো। সেখানে এখন অনেক জায়গায় তা ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ দুই দিনে ৩০-৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ঢাকার ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে দাম কিছুটা ওঠানামা করছে। কোথাও ১৪০ আবার কোথাও ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অনেক বিক্রেতা দাবি করছেন, যেহেতু পাইকারিতে তাদের কেনাই ১৩০-১৪০ টাকা পড়ছে। তাই খুচরায় বেশি দামে বিক্রি ছাড়া উপায় নেই।
রাজধানীর কিছু বাজারে ছোট পরিমাণে আগাম নতুন পাতাসহ পিঁয়াজ উঠতে দেখা গেছে। এসব পিঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৭০-৮০ টাকা। তবে সেটা এখনো মোট সরবরাহের তুলনায় খুবই কম।
ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলো বলছে, সরবরাহ কমে গেলে বা আমদানি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিলে দাম কিছুটা বাড়তে পারে। কিন্তু দুই দিনের ব্যবধানে এত বড় লাফ সাধারণত স্বাভাবিক বাজারচিত্র নয়।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সিনিয়র সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘বাজারে সরবরাহ একটু কমলেই যে এভাবে দুই দিনে ৩০-৪০ টাকা লাফিয়ে দাম বাড়বে, এটা স্বাভাবিক পরিস্থিতি নয়। ভারত থেকে কম টাকায় পিঁয়াজ আমদানি করে বেশি লাভের আশায় ব্যবসায়ীরা এই সংকট তৈরি করেছে। ভারতে এখন পিঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৪-৫ টাকা’ তিনি আরও বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা মজুত করা পিঁয়াজ কোথাও লুকিয়ে রেখে কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছেন। নতুন মুড়িকাটা পিঁয়াজও তারা বাজারে তুলছেন না। সরকার থেকে সরবরাহ কোথায় আটকে আছে, কোন পর্যায়ে দাম বাড়ছে-এসব তথ্য নিয়মিতভাবে যাচাই করা হলে এমন হঠাৎ অস্থিরতা সহজেই ঠেকানো যেত।’
সীমিত আকারে পিঁয়াজ আমদানির অনুমতি : পিঁয়াজের দামের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে আজ রবিবার থেকে সীমিত আকারে পিঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গতকাল কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতিদিন ৫০টি করে আইপি (আমদানি অনুমতি) ইস্যু করা হবে। প্রত্যেকটি আইপিতে সর্বোচ্চ ৩০ টন পিঁয়াজের আমদানির অনুমোদন দেওয়া হবে। এতে আরও বলা হয়, গত ১ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত যেসব আমদানিকারক রপ্তানি অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন তারাই কেবল আবেদন পুনরায় দাখিল করতে পারবেন। একজন আমদানিকারক একবারের জন্য আবেদনের সুযোগ পাবেন।