আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স- এআইয়ের অপব্যবহার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বড় ধরনের হুমকির মুখে ফেলবে। নির্বাচন কমিশন এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে না পারলে ভোটের ফলাফলে ব্যাপক প্রভাব পড়বে। তাতে নির্বাচনকালীন দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া নির্বাচন ঘিরে বর্ডার দিয়ে দেশে ভয়াবহ অস্ত্রের চালান আসছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এসব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অত্যন্ত জরুরি বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের। গতকাল রাজধানীর তোপখানা রোডে সিরডাপ মিলনায়তনে সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন-এর উদ্যোগে ‘সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক উত্তরণ : নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন বক্তারা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সহসভাপতি বিচারপতি এম এ মতিন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুজন-এর স¤পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। গোলটেবিলে সুজন সম্পাদক বলেন, বিগত সময়ে দেশে কয়েকবার সুষ্ঠু নির্বাচন হলেও গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটেনি। গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য শুধু নির্বাচনই যথেষ্ট নয়। এর জন্য প্রয়োজন আইনি, প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত সংস্কার। বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির গভীর বিশ্লেষণ থেকে আমরা বাংলাদেশের সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথে মোটা দাগে সাতটি প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করেছি। সেগুলো হলো- নির্বাচনি অঙ্গনে দুর্বৃত্তায়ন, রাজনৈতিক অঙ্গনে দুর্বৃত্তায়ন, নির্বাচনে টাকার অশুভ খেলা, নির্বাচন কমিশনের অকার্যকারিতা, নাগরিক সমাজের নিষ্ক্রিয়তা, নির্বাচনকালীন সরকারের পক্ষপাতদুষ্ট, ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ এবং ভারসাম্যহীনতা। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, অভ্যন্তরীণ সংকট ও বহির্বিশ্বের নানা সংকট থেকে উত্তরণের জন্য আগামী জাতীয় নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য রাজনৈতিক ঐক্য ও নির্বাচনের আবহ তৈরি করা দরকার।
বর্তমানে দলগুলো ইস্যুভিত্তিক আলোচনা থেকে যে কোনো মূল্যে নির্বাচনে জিতে আসার চেষ্টা করছে, যা সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে সবচেয়ে বড় বাধা। এ ছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এআই-এর অপব্যবহার নির্বাচনকে বাধার মুখে ফেলবে। এর থেকে উত্তরণের জন্য নির্বাচন কমিশনকে কাজ করতেও দেখা যাচ্ছে না। আর আলোকচিত্রী শহিদুল আলম বলেন, আমরা ভিন্ন এক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। সত্যিকারার্থে নির্বাচনে দুটি জিনিসের খেলা হয়। একটি টাকা আরেকটি লাঠি। এটাই যদি নিয়ম হয়, তাহলে আমাদের এত ব্যাখ্যা করার দরকার নেই। টাকা আর লাঠি ছাড়া সহজ সমাধান খুঁজতে হবে। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন লেখক ও সাবেক সচিব আবদুল আউয়াল মজুমদার, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ, নির্বাচন কমিশনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমীন টুলী, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এ কে এম ওয়ারেসুল করিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ, ডা. হালিদা হানুম আখতার প্রমুখ।