তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের কর্মবিরতি চলছেই। আন্দোলন কর্মসূচির কারণে এসব বিদ্যালয়ে বিঘ্নতা ঘটছে পরীক্ষা কার্যক্রমে। দাবি বাস্তবায়ন না হলে কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষকরা। শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে থাকায় টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অভিভাবকদের বার্ষিক পরীক্ষার দায়িত্ব পালন করার খবর পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে চার দফা দাবিতে সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের চলমান কর্মবিরতিতে বার্ষিক এবং এসএসসি নির্বাচনি পরীক্ষা অনিশ্চয়তায় পড়ায় গত রাতে এ কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন শিক্ষকরা। এর আগে সোমবার শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার কর্মবিরতি পালনরত শিক্ষকদের সরকারি কর্মচারী বিধি লঙ্ঘনের দায়ে শাস্তির মুখোমুখি করার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।
আন্দোলনরত প্রাথমিক শিক্ষকরা জানান, ‘সহকারী শিক্ষকরা দশম গ্রেড দাবি করলেও গত নভেম্বরে অর্থ মন্ত্রণালয় ১১তম গ্রেড, সহকারী শিক্ষকদের ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রদানের জটিলতা নিরসন ও প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতি প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু এরপর ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় পূর্ণদিবস কর্মবিরতিসহ পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছি।’ বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শামছুদ্দিন মাসুদ বলেন, ‘বিধি অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক পদে ৮০ শতাংশ পদোন্নতির এবং ২০ শতাংশ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে পূরণ করা হবে। অথচ আমরা সহকারী শিক্ষকরা শতভাগ পদোন্নতির দাবি করে আসছি। এর ফলে লাখ লাখ সহকারী শিক্ষক পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হবেন। তাই প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতি দেওয়ার দাবি জানাই।’
সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চার দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করে পালন করা কর্মবিরতি গত রাতে প্রত্যাহার করেন। সোমবার থেকে পরীক্ষা বর্জন করে কর্মবিরতি পালন করে আসছিলেন তাঁরা। গতকালও তাঁরা কর্মবিরতি পালন করেন। মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন তাঁরা। মাধ্যমিক শিক্ষকদের চার দফা দাবির মধ্যে ছিল সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারভুক্ত করে গেজেট প্রকাশ; বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় কর্মরত শিক্ষকদের বিভিন্ন শূন্যপদে নিয়োগ, পদোন্নতি প্রদান; বকেয়া টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড দেওয়া, সহকারী শিক্ষকদের একাধিক ইনক্রিমেন্ট প্রদান। গত রাতে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে মাধ্যমিক শিক্ষকদের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্যক্রম যাতে ব্যাহত না হয়, এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কর্মবিরতি সাময়িক স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বার্ষিক পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক অগ্রগতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষার অনিশ্চয়তায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা যে মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন, তা অনুধাবন করে দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে শিক্ষাকার্যক্রমে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকরা। আজ থেকে বিদ্যালয়গুলোতে নিয়মিত পরীক্ষা কার্যক্রম চলবে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।