বিভিন্ন দেশের চিন্তাবিদ, রাজনীতিবিদ ও কূটনীতিকদের নিয়ে তিন দিনব্যাপী ভূরাজনীতিবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংলাপ ‘বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন’ গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে শেষ হয়েছে। সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত তিন দিনের এই সংলাপে ৮৫টি দেশের ২০০ জন আলোচক, ৩০০ জন ডেলিগেট এবং ১ হাজারের বেশি গবেষক অংশ নেন। সংলাপে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সাংবাদিক নিবর্তনের জন্য রাষ্ট্র অনেক রকম পথ খোলা রেখেছে। যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তারা সাংবাদিক নিবর্তনের মানসিকতা মনে পোষণ করে।
শেষ দিনের সংলাপে চারটি প্ল্যানারি সেশন, চারটি গোলটেবিল বৈঠক ও একটি প্রতিবেদন প্রকাশ অধিবেশনের আয়োজন করা হয়। এসব অধিবেশনে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের সভাপতি আ ন ম মুনিরুজ্জামান, ঢাকায় নিযুক্ত কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক, কসোভোর রাষ্ট্রদূত লুলজিম প্লানা, জার্মানির রাষ্ট্রদূত রুডিগার লটজ্, অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার সুশান রাইল, কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়াও শেষ দিনের সংলাপে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, গ্রিস, জার্মানি, নেপাল, উজবেকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের আলোচকরা অংশ নেন। সংলাপে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, শুধু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে না। এই ট্রেন্ডটাকে পরিবর্তন করতে হলে রাষ্ট্রের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। আশা করি পরবর্তী নির্বাচিত সরকার সব ধরনের নিবর্তনমূলক আইনের পথ থেকে ফিরে আসবে। তারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো নীতিতে ফিরে যাবে না।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছিল, তা কখনোই বিচার শেষ করার জন্য ছিল না। বরং কথা বলা বন্ধ করার জন্য, লেখা বন্ধ করার জন্য করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, প্রেস কাউন্সিল যথাযথভাবে কাজ করছে না। গণমাধ্যম কমিশনের যে সুপারিশ এসেছে, তা ভালো। পাশাপাশি এ মুহূর্তে মানবাধিকার ও তথ্য কমিশনকে সক্রিয় করা প্রয়োজন, যাতে সবকিছু আদালতে না গিয়ে এসব কমিশনে সমাধান আসে।
সমাপনী বক্তব্যে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের সভাপতি জিল্লুর রহমান বলেন, বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন কেবল একটি সম্মেলন নয়, বরং বৈশ্বিক চিন্তা, মতবিনিময় এবং সহযোগিতার একটি অনন্য প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। এখানে ক্ষমতার পরিবর্তনশীল বিশ্ব, জলবায়ু নিরাপত্তা, প্রযুক্তি, তথ্য, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অর্থনীতি, নিষেধাজ্ঞা ও গণতন্ত্রসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গভীরভাবে আলোচিত হয়েছে।