ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে অবৈধ সুবিধা নিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা। এ কাজে বিভিন্ন সচিবকে মেসেজ পাঠিয়ে প্ররোচনা দিয়েছেন টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক। টিউলিপের অবৈধ নির্দেশ পালন করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার মামলায় রায়ের পর্যবেক্ষণে এসব কথা বলেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম। রায়ে শেখ হাসিনাকে পাঁচ বছর, শেখ রেহানাকে সাত বছর ও টিউলিপ সিদ্দিককে দুই বছর কারাদণ্ড দেন আদালত। রায়ে বিচারক বলেন, বর্তমানে দেশে দুর্নীতি একটি রোগে পরিণত হয়েছে। গোটা সমাজকে গ্রাস করে ফেলেছে এ রোগ। তাই সবাইকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, দুর্নীতির মাধ্যমে বোন শেখ রেহানাকে প্লট দিয়েছেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মা-খালাকে প্ররোচনা দিয়েছেন টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক। এ সময় পবিত্র কোরআনের সুরা মায়িদার একটি আয়াতের ব্যাখ্যা দেন বিচারক। আদালত বলেন, ‘মহান আল্লাহর বাণী হলো পাপ ও জুলুমের ক্ষেত্রে একে অপরকে সহায়তা করো না’। অথচ আবাসন সুবিধা থাকার পরও জালিয়াতির মাধ্যমে প্লট নিয়েছেন শেখ রেহানা। সমাজের মানুষকে এ দুর্নীতি রুখে দিতে হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ায় পৃথিবীর যে কোনো দেশে থাকলেও বিচারের এখতিয়ার আদালতের রয়েছে বলে উল্লেখ করেন বিচারক।
আদালত বলেন, শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সবাইকে প্রভাবিত করে মিথ্যা হলফনামা, তথ্য গোপন এবং জালজালিয়াতির মাধ্যমে বিধিবিধান না মেনে প্রত্যেকের নামে প্লট বরাদ্দ নেন। তিনি বলেন, ১৭ আসামির মধ্যে শুধু রাজউকের সাবেক সদস্য খুরশীদ আলম আদালতে উপস্থিত হয়েছেন।
এ ছাড়া কেউ মামলা মোকাবিলা করেনি। অন্য কাউকে মামলা মোকাবিলা করতে দেওয়া হয়নি, প্রশ্ন আসতে পারে উল্লেখ করে আদালত বলেন, আদালতে উপস্থিত হওয়ার জন্য পলাতক আসামিদের বরাবর বিভিন্ন তারিখে পত্রিকায়, গেজেটে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সুতরাং বলার অবকাশ নেই, আসামিদের আদালতে উপস্থিত হতে বাধা দেওয়া হয়েছে। আদালত আরও বলেন, টিউলিপ বিদেশে থেকে সচিবদের বিভিন্ন মেসেজ পাঠিয়ে প্রভাবিত করেছেন। কর্মকর্তারাও বিধিবিধান অমান্য করে প্লট বরাদ্দ দিতে ফাইল প্রস্তুত করেন।