কৃষ্ণসাগরে এমটি কায়রোস নামে একটি তেলবাহী জাহাজে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনের নৌবাহিনী। শুক্রবার তুরস্কের উপকূলে কৃষ্ণসাগর অতিক্রম করার সময় জাহাজটিতে হামলা চালায় ইউক্রেন। জাহাজটিতে চার বাংলাদেশিসহ ২৫ নাবিক ছিলেন। হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
জাহাজে থাকা চার বাংলাদেশি হলেন- নরসিংদীর প্রকৌশলী মাহফুজুল ইসলাম, কুষ্টিয়ার আল আমিন, ঢাকার ধামরাইয়ের হাবিবুর রহমান এবং চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার আজগর হোসাইন। তারা সবাই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে তুরস্কের একটি হোটেলে রয়েছেন।
মাহফুজুল ইসলাম বলেন, তেল পরিবহনের জন্য খালি ট্যাংকার নিয়ে মিসরের পোর্ট সুয়েজ থেকে রাশিয়ায় নভোরোসিস্ক বন্দরের যাচ্ছিলাম। শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৬ মিনিটে কৃষ্ণসাগর অতিক্রমকালে ড্রোনটি প্রপেলারে প্রথম হামলা করে। বিকট শব্দে জাহাজ ঝাঁকুনি দিয়ে ওঠে। এর ১০ মিনিট পর দ্বিতীয় ড্রোন আঘাত হানে জাহাজের ফুয়েল ট্যাঙ্কে। বিস্ফোরণের পর দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আমরা লাইফ জ্যাকেট পরে সাগরে ঝাঁপ দেওয়ার চিন্তা করি। কিন্তু সেই সুযোগ ছিল না, কারণ পানি প্রচণ্ড ঠান্ডা। আবার পানিতেও আগুন। আমরা একজন আরেকজনের কাছ থেকে মাফ চেয়ে নিচ্ছিলাম। মনে হয়েছে, বাঁচার আর কোনো আশা নেই। তুরস্কের কোস্টগার্ড উদ্ধার না করলে আমাদের বেঁচে ফেরা হতো না। উল্লেখ্য, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বাংলাদেশি নাবিকদের মৃত্যুঝুঁকির মুখে পড়ার এটি দ্বিতীয় ঘটনা। এর আগে, ২০২২ সালের ২ মার্চ ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে রাশিয়ার মিসাইল হামলার শিকার হয় বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’। এ হামলায় নিহত হন জাহাজটিতে দায়িত্বরত প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান। পরে জাহাজটিতে আটকে পড়া ২৮ নাগরিককে জীবিত উদ্ধার করা হয়।