সময়মতো সঠিক প্রস্তুতির মাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরি ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা গেলে বড় ধরনের ভূমিকম্পেও ক্ষতি এবং প্রাণহানি কমানো সম্ভব। বাংলাদেশ বড় ধরনের ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে এবং এখনই সিদ্ধান্ত না নিলে ভবিষ্যতে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। গতকাল রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে জেসিএক্স ডেভেলপমেন্টস লিমিটেড আয়োজিত ভূমিকম্প সচেতনতা এবং প্রস্তুতি বিষয়ক সেমিনারে দেশিবিদেশি বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন জেসিএক্স ডেভেলপমেন্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী, খ্যাতিমান প্রকৌশলী প্রফেসর ড. এম শামীম জেড বসুনিয়া, প্রফেসর ড. সৈয়দ ফখরুল আমিন (বুয়েট), রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট মো. ওয়াহিদুজ্জামান, ইঞ্জিনিয়ার আবদুল্লাহ আল হোসেন চৌধুরী রিজভী, প্রফেসর ড. রাকিব আহসান (বুয়েট), বাজুস প্রেসিডেন্ট এনামুল হক খান, বিএমইডির পরিচালক মমিনুল ইসলাম, রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম, রিহ্যাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, স্থপতি আরিফুল ইসলাম, স্থপতি রফিক আজম ও ভিস্তারার এমডি মুস্তফা খালিদ পলাশ। এ ছাড়া ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন জাপানের দুই ভূমিকম্প-সহনশীল স্থাপত্য বিশেষজ্ঞ সাকো আর্কিটেক্টস প্রতিষ্ঠাতা কেইচিরো সাকো ও ভেরিটাস জাপান এলএলসি প্রধান হিসায়া সুগিয়ামা। তারা জাপানের ভূমিকম্প-পরবর্তী অভিজ্ঞতা, নিরাপদ অবকাঠামো নকশা এবং আধুনিক টেকসই নির্মাণমান নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন। জেসিএক্স ডেভেলপমেন্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী স্বাগত বক্তব্যে বলেন, সম্প্রতি ঢাকায় অনুভূত একাধিক ভূমিকম্প দেশের ঝুঁকি স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। দ্রুত নগরায়ণ, জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং দুর্বল ভবন কাঠামোর কারণে বড় কোনো ভূমিকম্প ঘটলে বিপর্যয় ভয়াবহ হতে পারে। তাই সচেতনতা, প্রস্তুতি ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি।
তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্র, আবাসন খাত ও জনগণ- এ তিনটি স্তম্ভ শক্তিশালী হলেই আমরা ভূমিকম্প ঝুঁকি মোকাবিলা করতে পারব। সময় খুবই কম; আজই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি জানান, ভূমিকম্প-সহনশীল স্থাপত্য নির্মাণে জেসিএক্স স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে এবং প্রতিষ্ঠানটি ‘সেফটি ফার্স্ট’ নীতিতে বিশ্বাসী।
সেমিনারে দেশি-বিদেশি ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ, স্থপতি, প্রকৌশলী, রিয়েল এস্টেট উদ্যোক্তা, নীতিনির্ধারক এবং সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা বলেন, সরকারি বেসরকারি সব পর্যায়ের সমন্বিত উদ্যোগই পারে একটি ভূমিকম্প-সহনশীল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে। ভূমিকম্প প্রতিরোধী ভবন নির্মাণ, বিদ্যমান ভবনগুলোর স্ট্রাকচারাল অডিট, কাজের মান কঠোরভাবে তদারকি, জরুরি উদ্ধার সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কার্যকর প্রাথমিক সতর্কবার্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি নাগরিকদের নিয়মিত সচেতনতা কার্যক্রম এবং পরিবারভিত্তিক জরুরি প্রস্তুতির ওপর গুরুত্বারোপ করা উচিত।
