যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে আরও ৩৯ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে দেশটি। এ নিয়ে চলতি বছরে ১১৫ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন। গতকাল ভোরে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশেষ সামরিক ফ্লাইটে তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। এরপর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দেশে ফেরত কর্মীদের ব্র্যাকের পক্ষ থেকে পরিবহনসহ জরুরি সহায়তা দেওয়া হয়। ফেরত আসা ৩৯ বাংলাদেশির মধ্যে ২৬ জনই নোয়াখালীর। এ ছাড়া কুমিল্লা, সিলেট, ফেনী, লক্ষ্মীপুরের দুজন করে এবং চট্টগ্রাম, গাজীপুর, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ ও নরসিংদীর একজন করে রয়েছেন। দেশে ফেরত এসব কর্মীর সঙ্গে কথা বলে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম বিভাগ জানায়, এ ৩৯ জনের মধ্যে ৩৪ জন জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ছাড়পত্র নিয়ে ব্রাজিল গিয়েছিলেন। এরপর সেখান থেকে মেক্সিকো হয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। বাকি পাঁচজনের মধ্যে দুজন সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রে যান আর তিনজন দক্ষিণ আফ্রিকা হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। এরপর এ ৩৯ জন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের জন্য আবেদন করলে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সূত্র জানান, ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর অভিযান আরও জোরদার করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় একাধিক দফায় বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এদিকে চলতি বছরের বিভিন্ন সময়ে ফেরত আসা বাংলাদেশিদের হাতে হাতকড়া, পায়ে শিকল বেঁধে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো হলেও গতকাল ফেরত আসা বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রে সেটি হয়নি।
ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) শরিফুল হাসান বলেন, ‘এই যে সরকারের পক্ষ থেকে ব্রাজিলে বৈধভাবে কর্মী পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হলো, সে ক্ষেত্রে তারা ব্রাজিল না যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন সেটি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকার বা এজেন্সির কি কোনো সতর্কতা বা কৌশল ছিল? একেকজন ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা খরচ করে শূন্য হাতে ফিরলেন তার দায় কার? এভাবে বৈধভাবে অবৈধ হওয়ার পথে ছেড়ে দেওয়া ভীষণ দুর্ভাগ্যজনক ও দায়িত্বহীনতা। যে এজেন্সি তাদের পাঠিয়েছিল এবং যারা এ অনুমোদন প্রক্রিয়ায় ছিল তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত।’ এর আগে চলতি বছরের ৮ জুন একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে ৪২ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনা হয়। ৬ মার্চ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত একাধিক ফ্লাইটে আরও অন্তত ৩৪ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৪ সালের শুরু থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো বাংলাদেশির সংখ্যা ২২০ ছাড়িয়েছে।