বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে (পণ্য রাখার স্থান) আগুন লেগেছিল বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। গতকাল ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
প্রেস সচিব বলেন, বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে গত মাসের ১৮ তারিখে যে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল, তার তদন্ত প্রতিবেদন আজ (মঙ্গলবার) পেশ করা হয়েছে। এটা নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়।
শফিকুল আলম বলেন, তদন্ত কমিটি পেয়েছে যে বিভিন্ন কুরিয়ার এজেন্সির জন্য নির্ধারিত ৪৮টি ছোট ছোট লোহার খাঁচার অফিস ছিল কুরিয়ার শেডের ভিতরে। এগুলোতে ফায়ার অ্যালার্ম, স্মোক ডিটেক্টরসহ অগ্নিনির্বাপকব্যবস্থা ছিল না। কোনো অগ্নিনির্বাপক হাইড্রেন্ট ছিল না। কোনো ধরনের নিয়মের তোয়াক্কা ও সতর্কতা ছাড়াই পলিথিনে মোড়ানো কাপড়ের রোল, রাসায়নিক পদার্থ, পারফিউম, বডি স্প্রে, ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র, ব্যাটারি, ওষুধজাত পণ্যের কাঁচামালের মতো দাহ্য পদার্থ এলোপাতাড়িভাবে স্তূপ করে রাখা ছিল। প্রতিবেদনে ৯৭ জন সাক্ষীর মৌখিক ও লিখিত সাক্ষ্য জমা দেওয়া হয়। তিনি বলেন, এটা কোনো নাশকতা ছিল না। বৈদ্যুতিক আর্কিং এবং শর্টসার্কিটের কারণে আগুনটা লাগে। কয়েকটি কুরিয়ার খাঁচার মধ্যবর্তী স্থানে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। ২টা ৯ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত হয়, ২টা ১৫ মিনিটে তা দৃশ্যমান হয়। ৭ মিনিটের ব্যবধানে ২টা ২২ মিনিটে সিভিল অ্যাভিয়েশনের প্রথম অগ্নিনির্বাপক গাড়ি আসে। তারা দেখতে পায় ১৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। সেখানে অনেক অপ্রচলিত দাহ্য পদার্থ ছিল। তুরস্ক থেকে আগত বিশেষজ্ঞ দল, বুয়েট বিশেষজ্ঞ, অগ্নিনির্বাপক বিশেষজ্ঞ এবং সিআইডি ফরেনসিকের প্রতিবেদনে উল্লিখিত অগ্নিকাণ্ডের কারণ নিশ্চিত করা হয়েছে। শফিকুল আলম বলেন, ২০১৩ সালের পর শাহজালাল বিমানবন্দরে সাতটি বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। অনেক ঘটনা খবরে আসেনি। সিভিল অ্যাভিয়েশনের অগ্নিনির্বাপণের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা নেই। তদন্ত প্রতিবেদনে বিমানবন্দরের পরিচালনায় পৃথক কর্তৃপক্ষ স্থাপন, বিমানবন্দরের ভিতরে বিশেষ ফায়ার স্টেশন নির্মাণসহ বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব।