জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে প্রধান উপদেষ্টা, জাতীয় পার্টি-জাপা চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে চেয়ারম্যান এবং জাপা মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে মুখপাত্র করে ১৮টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত হলো নতুন রাজনৈতিক জোট জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট।
আজ সোমবার সকালে রাজধানীর গুলশানের ইমানুয়েলস সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই জোটের ঘোষণা দেন ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, এই জোটে বর্তমানে ছয়টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, জাতীয় পার্টির সিনিয়র চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, লিয়াকত হোসেন খোকা, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল ইসলাম জহির।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন জনতা পার্টি বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার মিলন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের চেয়ারম্যান সাবেক এমপি শাহ মো. আবু জাফর, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের সভাপতি আবু লায়েস মুন্না, তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব মেজর (অব.) ডা. হাবিবুর রহমান, গণফ্রন্টের মহাসচিব আহমেদ আলী শেখ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ, জাতীয় ইসলামী মহাজোটের চেয়ারম্যান আবু নাসের এম ওয়াহেদ ফারুক, জাতীয় সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মেজর (অব.) আমীন আহমেদ আফসারি, ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান এম আশিক বিল্লাহ, অ্যালায়েন্স ডেমোক্রেটিক পার্টি (এডিপি)-র চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম আর করিম, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান এম আর এম জাফর উল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশ স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু, বাংলাদেশ স্বাধীন পার্টির চেয়ারম্যান মির্জা আজম এবং ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান নারায়ণ কুমার দাস।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন ব্রিটিশ হাই কমিশনের রাজনৈতিক কাউন্সিলর টিম ডাকেট, মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধি কামরুল হাসান খান, ব্রুনাই মিশনের প্রধান রোজাইমি আবদুল্লাহ, ভারতীয় দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব (রাজনৈতিক) পুজা ঝা এবং এফিসাস-এর কাজী শহীদুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে জোটের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। লিখিত বক্তব্যে জোটের মুখপাত্র ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এ দেশের শ্রেষ্ঠ সংস্কারক। তাকে বাদ দিয়ে দেশের ইতিহাস লেখা যাবে না। তিনি গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা চালু করার জন্য ১৯৮৬ সালে নির্বাচন দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্র এখনো দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়নি, যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আজও আমাদের লড়াই করতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি, প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় ও তার সরকার সকল দলকে নিয়ে একটি সুস্থ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করবেন। কোনো দলকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে, সেই নির্বাচনের পর গঠিত সরকার ক্ষণস্থায়ী হবে। অতীত থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। আমরা সেদিন মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলাম। মুক্তিযুদ্ধ স্বাভাবিকভাবে হয়নি। ৩০ লাখ শহীদ এবং দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। যখন কেউ স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কথা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলেন- আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়।
তিনি আরও বলেন, সশস্ত্র বাহিনী ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিল। কিন্তু সেই সশস্ত্র বাহিনীকে ছোট করা, কটাক্ষ করা এবং নানাভাবে হেয় প্রতিপন্ন করলে আমাদের হৃদয় রক্তক্ষরণ হয়। রাজনীতিতে কেউ চিরশত্রু নয়, কেউ চিরমিত্রও নয়। আমরা সকলে মিলে আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে পারি- যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন আমাদের নেতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম নাসরিন জাহান রত্না, ফখরুল ইমাম, মাসরুর মাওলা, নাজমা আক্তার, ব্যাপক নুরুল ইসলাম মিলন, জিয়াউল হক মৃধা, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, আরিফুর রহমান খান, সরদার শাজাহান, মোবারক হোসেন আজাদ, ফখরুল আহসান শাহজাদা, বেলাল হোসেন, নুরুল ইসলাম ওমর, নাজনিন সুলতানা, আমানত হোসেন আমানত, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, শাহ জামাল রানা, শেখ মতলব হোসেন লিয়নসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ