ইজিবাইক, অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত ছোট যানবাহনে ঝিনাইদহ শহরের সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জট লেগে থাকে। ফুটপাত দখল, এলোমেলো পার্কিং, উল্টোপথে যান চলাচলে এ অবস্থা বলছেন স্থানীয়রা। পাশাপাশি অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও অদক্ষ চালক এসব যানবাহন চালানোয় মাঝে মধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। বিশেষ করে স্কুল-কলেজ শুরু ও ছুটির সময় শহরের ব্যস্ত এলাকায় তৈরি হয় তীব্র যানজট। প্রতিদিন চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় শহরের হাজার হাজার মানুষকে।
পৌরসভার তথ্য মতে, শহরে নিবন্ধিত ইজিবাইকের সংখ্যা মাত্র ২ হাজার ৫০০। তবে বাস্তবে এ সংখ্যা ১০ গুণেরও বেশি। শহরের প্রাণকেন্দ্র পায়রা চত্বর, মডান মোড়, পুরানো ডিসি কোর্ট এলাকা, আরাপপুর বাসস্ট্যান্ড, শহীদ মিনারসহ সবখানেই ইজিবাইকের দাপট। স্থানীয়রা বলছেন, শহরের সবচেয়ে বড় সমস্যা যানজট। ফুটপাত দখল, এলোমেলো পার্কিং, উল্টোপথে চলাচল নিত্যদিনের দৃশ্য। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সড়কে যানজটের কারণে দোকানে ক্রেতা কমে যাচ্ছে। শহরের হামদহ এলাকার আবিদুর রহমান বলেন, ‘শহরে বর্তমানে ইজিবাইক ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অদক্ষ চালকদের কারণে সব সময় যানজট লেগে থাকছে। মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটছে। ভোগান্তির কারণ না হয় এমন পরিবহনের ব্যবস্থা করা জরুরি হয়ে গেছে। যাতে স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে ও আসতে পারে।
জেলা নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবদুলাহ বলেন, ‘শহরে ইজিবাইক চলাচল বন্ধ করা সম্ভব নয়। সুনির্দিষ্ট রুট নির্ধারণ, নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা, ব্যাটারি ও চার্জিং ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ, ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে শহরে যানজট ও বিশৃঙ্খলা অনেক কমে আসবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নজর দেওয়া উচিত।’
ঝিনাইদহের ট্রাফিক পরিদর্শক মো. মসিউর রহমান বলেন, শহরে ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করি। তবে সংখ্যার তুলনায় চালকরা এত বেশি যে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলেও আমাদের পক্ষে পুরোপুরি সম্ভব হচ্ছে না। অনেক যানবাহনের লাইসেন্স নেই, নেই বৈধ কাগজপত্র, এমনকি অপ্রাপ্ত বয়স্ক চালকের সংখ্যাও কম নয়। ফলে শহরে দুর্ঘটনা বাড়ছে। কয়েক মাসে শহরের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত দুর্ঘটনার বেশির ভাগই ব্যাটারিচালিত যানবাহনে।’
ঝিনাইদহ পৌরসভার প্রশাসক রথীন্দ্রনাথ রায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘পৌর কর্তৃপক্ষ মাত্র ২ হাজার ৫০০ ইজিবাইকচালককে লাইসেন্স প্রদান করেছে। তবে শহরে এর কয়েকগুণ বেশি ইজিবাইক চলাচল করছে। আমরা নিয়মিত মনিটরিং করছি। ‘আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি শহরে ইজবাইক চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। আশা করছি সবার প্রচেষ্টায় শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান ঘটবে।’